দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা কেম সোখাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগে ২৭ বছর গৃহবন্দী থাকার দণ্ড দিয়েছেন দেশটির ফোম পেন্হ মিউনিসিপ্যাল আদালত।
শুক্রবার (৩ মার্চ) এ রায় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ন্যাশনাল রেস্কিউ পার্টির (এনআরপি) নেতা কেম সোখাকে ২০১৭ সালে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এরপর করোনা মহামারির কারণে তার বিচার কার্যক্রম ধীর হয়ে যায়। তবে দীর্ঘ সময় পর তাকে ২৭ বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
ফোম পেন্হ মিউনিসিপ্যাল আদালতের বিচারক আরও রায় দিয়েছেন, কেম সোখা অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজনীতি এবং নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে নিষিদ্ধ থাকবেন।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়া রাতের বেলা নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর কয়েকবার জামিন আবেদন করা হলেও সেটি প্রত্যাখ্যান করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে গৃহবন্দী থাকার শর্তে জামিন দেওয়া হয়। এখন তাকে ২৭ বছর এই বাড়িতেই বন্দী থাকতে হবে।
কেম সোখার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিদেশিদের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রী হুন সেন ও তার সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন।
কম্বোডিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হুন সেন ১৯৮৫ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন। তাকে বিশ্বের অন্যতম বড় স্বৈরাচার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় আগামী জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে হুন সেন আবারও এ নির্বাচনে অংশ নেবেন। তবে অনেকের বিশ্বাস, এবার হয়ত নিজের বড় ছেলে হুন মানেতের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন তিনি।
বিরোধীদলীয় নেতা কেম সোখাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ২০১৩ সালের একটি ভিডিওর ওপর ভিত্তি করে। সেই ভিডিওতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রপন্থিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি।
এ রায়ের পর পশ্চিমা দেশ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই কেম সোখার বিরুদ্ধে এ রায় দেওয়া হয়েছে।
কেম সোখার ন্যাশনাল রেস্কিউ পার্টিকে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে নিষিদ্ধ করা হয়। এর আগের নির্বাচনে দলটির জনপ্রিয়তা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে, বর্তমান ক্ষমতাসীন দলকে প্রায় ক্ষমতাচ্যুতই করে দিয়েছিল তারা।
২০১৮ সালে নিষিদ্ধ করার পর দলটির বড় নেতাদের বিভিন্ন অভিযোগে বিচার করা হয়। আবার অনেকে দেশ ছেড়ে চলে যান।
সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি