পিবিএ,শেরপুর: ধানের জমিতে কাজ করছেন কিছু কৃষাণী। তাদের কারো মুখে মাস্ক নেই। তারা মাঠে ব্যস্ত কৃষি কাজে। আবাদি জমির পরিচর্যায় ঘাম ঝরা রোদে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করছে। শ্রমজীবী এসব মানুষের মধ্যে নেই করোনা আতঙ্ক। তাদের চোখে মুখে ফসল বাঁচানোর চিন্তা। এরা সবাই কৃষি শ্রমিক। অন্যের জমিতে কাজ করলেই চুলোয় ওঠে ভাতের হাঁড়ি। তাই করোনার সংক্রমণ নিয়ে এরা চিন্তিত নয়। এদের কপালে চিন্তার ভাজ দু’মুঠো ভাতের যোগান নিয়ে।
৩০ মার্চ সোমবার সকালে শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের নাইশিমুল গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। সামাজিক দূরত্ব কিংবা সঙ্গরোধের বালাই নেই সেখানকার মানুষের মধ্যে। সচেতনতার অভাবের চেয়ে এখানকার অসহায়, দুস্থ ও শ্রমজীবী মানুষের পেটের ক্ষুধা মেটানোর অভাবটা একটু বেশি। তাই সরকারি নির্দেশনা কিংবা করোনা মোকাবিলায় সঙ্গরোধে থাকার বিষয়টি এখানে উপেক্ষিত।
হাতিগারা গ্রামের নারী কৃষি শ্রমিক রামাবালা বলেন, হামরা কামলা দিয়া খাই। ঘরোত থাকলে পেট চলবি কেমন করি। খাবার ব্যবস্থা করি দিলে না। ওই করোনা রোগের চ্যায়া প্যাটের ক্ষিধা বেশি ভয়ংকর। এসব এলাকার সচেতন মানুষরা বলছেন, শহরের বাসিন্দাদের মতো এসকল মানুষকে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য সচেতন করতে হবে। একই সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার আগেই তাদের খাদ্য নিশ্চিত করে চলাফেরা বন্ধ করে দিতে হবে।
বিশালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, এই সকল নিম্ন আয়ের মানুষ করোনা তো বোঝেই না, স্বাস্থ্য সচেতনও নয়। খেটে খাওয়া মানুষজন জীবিকার তাগিদে কাজে ছুটছেন। এখানে চলাফেরাতেও নেই কোনো সীমাবদ্ধতা। খুব দ্রুত এসব মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ জানান, ছোট-বড় সব মিলিয়ে আদিবাসি সম্প্রদায়ের নিম্ন আয়ের ৪০ হাজার জনগোষ্ঠী। শ্রম বিক্রিই এসব পরিবারের একমাত্র বেঁচে থাকার পথ। তাই নিজেদের জীবিকার তাগিদে তাদের প্রতিদিনের সকালটা শুরু হয় কাজের সন্ধানে। যাদের প্রতিদিন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে তাদের জন্য ইতিমধ্যেই সরকার কর্তৃক ১০ কেজি চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত তারা এর ফল পাবে।
পিবিএ/আবু বকর সিদ্দিক/বিএইচ