“তামিমের এই ইনিংস অনেকদিন মনে রাখবে মানুষ”

পিবিএ ডেস্ক: তার ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে কথা হচ্ছিলো প্রচুর। বারবার প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়েছেন পাওয়ার প্লে’র মধ্যে অতিরিক্ত ডটবল খেলার কারণে। দলে তার জায়গা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ফেলেছিলেন নিন্দুক-সমালোচকরা। এসবের জবাব দেয়ার জন্য ঝড় তোলা একটি ইনিংসের প্রয়োজন ছিল তামিম ইকবালের।

সেটিই তিনি মঙ্গলবার খেললেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। ইনিংসের ২৬ বল বাকি থাকতে সাজঘরে ফিরেছেন তামিম। তার আগে দলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে ১৩৬ বল মোকাবেলায় খেলেছেন দেশের ওয়ানডে ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫৮ রানের ইনিংস।

টানা কয়েক ম্যাচের ব্যর্থতা ছাপিয়ে মাত্র ৪২ বলে পূরণ করেছিলেন নিজের ৪৯তম হাফসেঞ্চুরি। সেটিকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে খেলেন আরও ৬৪ বল। ইনিংসের ৩৭তম ওভারে ১২তম সেঞ্চুরি হাঁকানোর সময় তার ইনিংসে চার ছিলো ১৪টি, ছক্কার ঘর তখনও শূন্য।

সেঞ্চুরি পূরণের পরই যেনো অন্য এক তামিমের আবির্ভাব। ইনিংসের ৪০তম ওভারে টিনোটেন্ডা মুতমবদজির চার বল খেলেই নিয়ে নেন ১৮ রান। সে ওভারের দ্বিতীয় বলে আসে তামিমের ইনিংসের প্রথম ছক্কা। যা ছিলো ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০ ইনিংস পর তামিমের ছক্কার মার।

সেই ওভার থেকে শুরু হলো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং! তা চললো ৪৬তম ওভারে আউট হওয়ার আগপর্যন্ত। ১০৬ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করার পর দেড়শতে পৌঁছতে মাত্র ২৬টি বল খেলেছেন তামিম, হাঁকান ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা। দেড়শতে যাওয়ার পর ছক্কা মেরেই নিজের আগের করা ১৫৪ রানের রেকর্ড ছাড়িয়ে যান তিনি।

এ ইনিংসের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ছাড়াও, তামিম গড়েছেন আরও দুই কীর্তি। ব্যক্তিগত ৮৪ রানের সময় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পা রাখেন ওয়ানডেতে সাত হাজার রানের মাইলফলকে। আর আউট হওয়ার আগে ২০টি চার মেরে গড়েন বাংলাদেশের পক্ষে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ চারের রেকর্ড।

এমন এক ইনিংসের পর প্রশংসায় ভেসে যাওয়াটাই স্বাভাবিক, তামিম সেটা ভাসছেনও। যেখানে বাদ যাননি জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও। ইনিংস ব্রেকে সংবাদ মাধ্যমে সঙ্গে আলাপে নান্নু জানিয়েছেন, সিলেটের মানুষ অনেকদিন মনে রাখবে তামিমের এই ইনিংস।

প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সন্দেহ নেই, এটি দেশের অন্যতম সেরা ইনিংস। ওর (তামিম) কাছ থেকে এমন সেঞ্চুরিই তো আশা করা হয়। মাঝের সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। এটা ঘুরে দাঁড়ানো ইনিংস, মনে রাখার মতো ইনিংস। সিলেটের মানুষ যারা কাছ থেকে দেখেছে, তারা অনেকদিন মনে রাখবে।’

প্রথম ম্যাচে ১০৫ বলে ১২৬ রানের এক ঝকঝকে ইনিংস খেলেছিলেন তামিমের সঙ্গী ওপেনার লিটন দাস। আর আজ তামিম খেললেন দেশের সেরা ইনিংস। দুই ম্যাচে দুই ওপেনারের সেঞ্চুরি প্রধান নির্বাচককেও দিয়েছে স্বস্তি। তার মতে দলের সংগ্রহ ৩০০ ছাড়ানোর জন্য ওপেনারদের এমন পারফরম্যান্সই খুব দরকার।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটা ভালো জিনিস যে ওপেনাররা রান করছে। যে কোনো দলের জন্যই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ওপেনাররা ভালো স্টার্ট দিলে ৩০০’র বেশি রান করা যায়। রানের গড়টা যদি সাড়ে পাঁচ-ছয়ের কাছাকাছি থাকে, ৪০ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রাখলে…এই প্ল্যান সবসময়ই করা হয়, এটা পুরোপুরি হলেই কিন্তু ৩০০’র কাছাকাছি সংগ্রহ পাওয়া যায়। আমাদের ওপেনাররা আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেছে, এটা ধারাবাহিক থাকলে দলের জন্যও ভালো কিছুই হবে।’

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...