পিবিএ ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো নোট ছাড়াই রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়। আমি আশা করব মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় আরও নিবিড়ভাবে যাচাই-বাছাই করে রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করবে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কৃষক লীগ আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিজয় দিবস উদযাপন এবং চলমান দুর্নীতি, মাদক ও মজুতদারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর শুদ্ধি অভিযানে একাত্মতা প্রকাশ করে এ সভার আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজাকারদের যে তথ্য আছে, সেগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে চেয়েছিল। পরে পাঠানো হয়েছে। এটি একটি দুরূহ ব্যাপার। দালাল আইনে ১৯৭২ সালে যাদের নামে মামলা হয়েছিল, তদন্ত শুরু হয়েছিল, পরে আবার কেউ কেউ মামলা থেকে প্রত্যাহার হয়েছিল, তাদের আমরা প্রাথমিকভাবে নিয়েছি। আমরা প্রাথমিকভাবে সেই মামলার বিবাদীদের নাম লিস্ট করি। পরে আমরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিই। তবে সেই লিস্টে কিছু মন্তব্য করে দিয়েছি যে, অনেকগুলো মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এ হিসেবে আমরা আমাদের এখান থেকে একটি নোটও দিয়েছিলাম। সেই নোটে যাদের নামের মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছিল, তাদের লেখা হয়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভুল করে হোক আর যেভাবে হোক এ ধরনের কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমি মনে করি আরও যাচাই-বাছাই করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় আবার তালিকা প্রকাশ করবে। আমরা যেটা পাঠিয়েছিলাম, সেখানে নোট দিয়েছিলাম এত নম্বর থেকে এত নম্বরের মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু পুরোপুরিভাবে এই নোট ছাড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, চলমান শুদ্ধি অভিযান থেমে নেই। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এই অভিযান চলবে। যতদিন সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে না ততদিন শুদ্ধি অভিযান চলবে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। সে যে-ই হোক। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। এখন তথ্যভিত্তিক অভিযান চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি পরিষ্কারভাবে ভারতকে বলেছি, আপনারা যাদের আশ্রয় দিয়েছেন, তাদের নাগরিকত্ব দিবেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে তাদের দেশে গিয়ে আমি বলেছি, আপনাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। অমিত শাহকে আমি বলেছি, আপনি বার বার বলছেন, আপনারা কোনো হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টানকে তাড়িয়ে দেবেন না। আমি আপনাদের মতামতকে স্বাগত জানাচ্ছি। কারণ ১৯৭১ সালের পরে কোনো মুসলমান বাংলাদেশ থেকে ভারতে যায়নি। কিংবা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেনি।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি, সেই সময়ে যাদের আপনারা (ভারত) আশ্রয় দিয়েছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেবেন। আমরা ওয়েলকাম জানাব। সেজন্য এনারসিতে তারা কোনো হিন্দু-মুসলমানকে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে, এটা মনে হয় হবে না। কারণ ১৯৭১ সালের পরে আমাদের দেশ থেকে কোনো লোক যায়নি।
কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, সাবেক সহ-সভাপতি শরীফ আশরাফ আলী, সংগঠনটির ফরিদপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা নুর-ই আলম সিদ্দিকী হক, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য আবুল হোসেন প্রমুখ।
পিবিএ/এমআর