পিবিএ, খুলনা: খুলনা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের বেতগ্রাম-কয়রা সড়কের ৫১ তম কিলোমিটারে অবস্থিত কয়রা সেতুর টোল আদায়ের নামে চাঁদাবজির অভিযোগ উঠেছে। ওই পথে যাতায়াতকারি যানবাহনের চালকেরা এমন অভিযোগ করেছেন সওজে’র এক কার্য্য সহকারির (ওয়ার্ক এ্যাসিস্ট্যান্ট) বিরুদ্ধে। ওই কার্য্য সহকারির নাম আঃ সবুর। তিনি গত এক মাস ধরে সেতুটির টোল আদায়ের দায়িত্ব পালন করছেন। কি কারনে তিনি টোল আদায়ের দায়িত্ব পালন করছেন সে সম্পর্কে তিনি জানাতে পারেননি। গাড়ী চালকদের অভিযোগ, কোন যানের কত টোল এ সম্পর্কিত একটি চার্ট সেতুর টোল ঘরের এক পাশে টানানো থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। চার্টে নিধারিত মূল্য তালিকার চেয়ে দুই তিন গুন বেশি টাকা রাখা হচ্ছে। এ জন্য গাড়ী চালকদের সাথে দূর্ব্যাবহারও করছেন তিনি।
সরেজমিন সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, টোল ঘরের এক পাশে চেয়ার নিয়ে বসে আছেন কার্য্য সহকারি আঃ সবুর। তার হয়ে সেখানে টোল আদায়ে ব্যস্ত রয়েছেন তার ভাই ও ভাগ্নেরা। ওই সময় একটি পিকআপ চালকের সাথে টোল নিয়ে বাকবিতন্ডা করতে দেখা যায়। পরে ওই পিকআপ চালকের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেখানে টানানো সওজের নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ি ওই সেতু পারাপারের জন্য ট্রেইলার ১২৫ টাকা, হেভী ট্রাক ১০০ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ৫০ টাকা, বড় বাস ৪৫ টাকা, মিনিট্রাক ৪০ টাকা, কৃষি যান ৪০ টাকা, মিনিবাস ২৫ টাকা, মাইক্রোবাস ২০ টাকা, ফোর হুইলার যান ২০ টাকা, সিডান কার ১৫ টাকা, মটরসাইকেল ৫ টাকা ধার্য্য রয়েছে। বেশি টাকা নেওয়া প্রসংগে জানতে চাইলে কার্য্য সহকারি আঃ সবুর বলেন, ঠিকাদারের লোকজন আসলে তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।
পিকআপ চালক হাসান অভিযোগ করেন, চার্টের নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ি তার টোল দেওয়া কথা ২০ টাকা। অথচ তার কাছ থেকে জোর করে ১০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে অনেক খারাপ আচারন করা হচ্ছে। এটা এক প্রকার চাঁদাবাজি বলে মন্তব্য করেন তিনি। সিরাজ নামে এক অটো রিকসা চালক অভিযোগ করেন, নছিমণ ও সিএনজি অটোরিকসার জন্য ৫ টাকা টোল ধার্য থাকলেও তাদের কাছ থেকে প্রতিবার ১০টাকা ও লোড বেশি থাকলে ২০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। কোন কথা বললে টোলের লোকজন খারাপ আচরণ করে।
সওজে’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল মোমেন বলেন, সেতুটির টোল আদায়ের জন্য দপরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সে সময়টুকু অফিস থেকে ‘খাস আদায়’ করা হচ্ছে। দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে টোল আদায় করা হবে। এ মুহুর্তে টোল বেশি নেওয়া প্রসংগে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা জানা নেই। তালিকা অনুযায়ি নির্ধারিত মূল্যের বেশি টোল আদায় করার কথা নয়। খুলনা সওজে’র নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস বলেন, টোল আদায়ের নামে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিবিএ/হারুন অর রশিদ/বিএইচ