পিবিএ,ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাসে যেভাবে আক্রান্ত এবং মারা যাচ্ছে তার তুলনায় আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি।
করোনাভাইরাসে কর্মহীন হয়ে পড়া ৫০ লাখ পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে সরাসরি নগদ অর্থ প্রেরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছিলেন দীর্ঘদিনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। একদিকে তিনি যেমন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছেন, অপরদিকে সেসময় আমাদের যারা পাকিস্তানি হানাদারের নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, যে পরিবারগুলো শহীদ হয়েছিল, আহত মুক্তিযোদ্ধাসহ নির্যাতিতা মা-বোন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি করেছিলেন। কখনও একটা বিপ্লবের পর এত অল্প সময়ের মধ্যে কোনো দেশ এত দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে না। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই অসাধ্য সাধন করেছিলেন। সেই অসম্ভবকে তিনি সম্ভব করেছিলেন। নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেই তিনি যেমন যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিলেন, আবার তার নেতৃত্বেই দেশ এগিয়ে যেতে শুরু করে উন্নয়নের গতি ধারায়।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশে তখন মঙ্গা থাকে না, দরিদ্র থাকে না, এটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি।
‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল। প্রবৃদ্ধি ৮.১ অর্জন করেছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা যখন আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি, এমন সময় একটি অদৃশ্য শক্তির আঘাত, যার ফলে সমগ্র বিশ্ব একেবারে থমকে গেছে। সারা বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে আক্রান্ত।’
‘পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে যেখানে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। এই যে একটি অদৃশ্য শক্তির হঠাৎ আক্রমণ এবং এর ফলে কিন্তু সবাই বিপর্যস্ত। আমাদের ভূখণ্ড ছোট কিন্তু জনসংখ্যা বেশি ।তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অর্থনীতি সচল রাখা উচিত। এ জন্য আমাদের রয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। অন্যান্য দেশে যেভাবে আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে এবং মারা গেছেন এর তুলনায় আমরা কিন্তু অনেক নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি’, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবনে প্রয়োজনটা অনেক বেশি। মানুষদের ক্ষুধার জ্বালাটা কিন্তু আমরা বুঝি। এ জন্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এমন একটি অদৃশ্য শক্তির মোকাবিলা কিন্তু কোনো দেশই পারছে না। কত শক্তিশালী দেশকে আমরা দেখছি, এই করোনাভাইরাস শক্তির কাছে সারেন্ডার করতে হচ্ছে।
‘লাভ হয়েছে প্রকৃতির। জলবায়ুর কারণে পরিবেশ-প্রতিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। প্রকৃতি কিন্তু তার আপন গতিতে ফিরে যাচ্ছে। এটি একটি অদ্ভুত ব্যাপার, এ ধরনের ঘটনা কিন্তু পৃথিবীতে আর কখনও ঘটেনি। অনেক মহামারির কাহিনি জানি, দুর্ভিক্ষের কাহিনি জানি। কিন্তু এবারের বিষয়টা ভিন্ন’, বলেন শেখ হাসিনা।
পিবিএ/এমআর