‘অপরাধ সংঘটনকালে দাঁড়িয়ে না থেকে ছবি বা ভিডিও ধারণ করে দিন’

অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় কোথাও কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটলে আশেপাশের মানুষেরা নীরব ভূমিকায় অবস্থান নেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জনগণের অগ্রণী ভূমিকা রাখা উচিৎ বলে মনে করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান।

তিনি বলেন, অপরাধ সংগঠের সময় দর্শক হয়ে সেটি না দেখে অন্ততপক্ষে চিত্র বা ভিডিও ধারণ করে অথবা অন্যান্য তথ্য আমাদের সরবরাহ করুন। তাহলে আমরা এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারব।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকালে শেরেবাংলা নগর থানা প্রাঙ্গনে পুলিশ, ছাত্র-জনতা ও সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের সমন্বয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খোন্দকার নজমুল হাসান বলেন, আপনারা ব্যক্তিগত লাভের কথা চিন্তা না করে এলাকার স্বার্থ বিবেচনা করুন। কোন কোন অপরাধের ঘটনার ক্ষেত্রে অনেক সময় নাগরিকগণ নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবস্থান নেন।

এক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আপনাদেরও অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। অন্ততপক্ষে অপরাধ সংগঠনের চিত্র বা ভিডিও ধারণ করে অথবা অন্যান্য তথ্য আমাদের সরবরাহ করুন। তাহলে আমরা এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারব। এসব সাক্ষ্য বা তথ্যের মাধ্যমে আদালতে অপরাধ সঠিকভাবে প্রমাণ করা যায়। দিনশেষে অপরাধ প্রমাণ করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

তিনি আরো বলেন, চাঁদাবাজি এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের উদ্যোগ চলমান রয়েছে তবে এক্ষেত্রে কিছু জটিলতা তৈরি হয়, যা আপনাদের সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য আমি নগরবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। পুলিশকে কাজের পরিবেশ না দিলে আইনশৃঙ্খলা সহ অন্যান্য কাজ ব্যাহত হবে। এ বিষয়গুলো আপনারা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন। সাধারণ জনগণ পুলিশের প্রতি আস্থাশীল রয়েছেন, এই কারণে আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, মাদক সমস্যা হল সকল অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু। কারণ একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি টাকার প্রয়োজনে আরো অন্যান্য অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়ে, এক্ষেত্রে অভিভাবকগণের প্রতি আমার একান্ত অনুরোধ থাকবে, আপনারা সন্তানদের গতিবিধির উপর দৃষ্টি রাখুন। শুধু যারা মাদক গ্রহণ করছে তাদের বিরুদ্ধে নয় বরং যারা মাদকের ব্যবসার সাথে যুক্ত আমরা তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও শেরেবাংলা নগর থানা এলাকার সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের কাছে তাদের বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।

শেরেবাংলা নগর থানা এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক শামীম বলেন, আজকের এই সভা আয়োজনের জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশ আন্তরিক হলে মাদক, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ হ্রাস পাবে। এক্ষেত্রে জনগণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

সভায় উপস্থিত তারিকুল বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় পুলিশের ভূমিকা খুব গুরত্বপূর্ণ। সকল প্রকার অন্যায় শক্ত হাতে দমন করে আইনগত সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি।

তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল কবীর খান এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় তেজগাঁও বিভাগের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এবং ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন...