পিবিএ ডেস্ক: প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নানা কাণ্ড করে থাকে মানুষ। কখনো কখনো প্রেমে ধোকা খেয়ে প্রেমিক প্রেমিকা মৃত্যুর পথও বেছে নেয়। কিন্তু কেন ধোকা দেয় প্রেমিক প্রেমিকারা। এর উত্তর খুজে পেয়েছে একদল গবেষক। চলুন জেনে নেই কেন ধোকা দিচ্ছে প্রেমিক-প্রেমিকারা।
বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের প্রভাবেই পুরুষ বা নারীসুলভ বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। এক সময় তারা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে। সেইসঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতাও শুরু হয়। ক্ষেত্রবিশেষে কিছু ব্যতিক্রম বিষয় পাওয়া গেলেও অধিকাংশের ক্ষেত্রেই ঠিক বয়ঃসন্ধি থেকেই রিলেশনশিপ তথা সম্পর্কে জড়ানোর ইচ্ছার স্ফীতি ঘটে।
আপনার ক্লাস সিক্সে পড়া ছোট ভাই বা বোনটাও গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ডের ব্যাপারে পণ্ডিত। ফেসবুকে যখন আপনি ক্লাস নাইনে পড়া কোনো ছেলে মেয়ের তিন বছরের রিলেশনশিপ সেলিব্রেশনের স্ট্যাটাস দেখেন, তখন নিশ্চয়ই আপনার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়। সিঙ্গেল থাকলে আপনি জ্বলে যান, আর তা না হলে সমালোচনা করেন। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, এই অল্প বয়সে বেড়ে ওঠা সম্পর্কের শেষটা কোথায় যায়?
শুধু তারাই বা কেন! কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দেখুন। কত জনের সম্পর্কে ভালো পরিণতি আসে, সে হিসাব মিলাতে গিয়ে অবশ্যই অবাক হবেন আপনি। সম্পর্কে জড়ানোর জন্য চাই দু’টো মনের মধ্যে চমৎকার মিল, চাই দু’জনের ব্যক্তিত্বে মিল, দু’জনের মধ্যে একে অপরকে বোঝার অলৌকিক সামর্থ্য, আরও কত কী! ইতিবাচক করে বললে এসব নিয়ে অনেক কথাই উঠে আসবে। মানুষের সাইকোলজি খুবই জটিল। বছরের পর বছর রিলেশনশিপে থেকেও শেষ অবধি আর দু’জনের একসঙ্গে সারাজীবন কাটানো হয় না। ধোঁকা দিয়ে চলে যায় একে অন্যকে ছেড়ে।
সামাজিক বিভিন্ন দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গ বাদ দিলে, এর পেছনে ব্যক্তির দ্বন্দ্বই মূল ভূমিকা রাখে। ছেলেরা এই ধরনের ঠকবাজি বেশি করে। যে ছেলেরা একাধিকবার যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে, যাদের একাধিক যৌনসঙ্গী থাকে, তাদের সঙ্গে সম্পর্কে না জড়ানোই নিরাপদ। তাছাড়া দু’জনের মধ্যে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব থাকলে সম্পর্কে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। প্রেমের অগ্নিপরীক্ষায় পাস করে আপনি আপনার সঙ্গীকে আপনার মত করে নিবেন এসব আবেগী ব্যাপার ভুলে যান।
যুক্তরাজ্যের কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকে ছেলে-মেয়েদের সম্পর্কে জড়ানোর পর ধোঁকা দেয়ার ওপর গবেষণা করেন। এতে ১২৫ জন ১৭ থেকে ২৩ বছর বয়সী ছেলে-মেয়ে অংশ নেয়। যারা রিলেশনশিপে আছে। গবেষণার জরিপে দেখা যায়, মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা ধোঁকাবাজি বেশি করে। কেবল চুমুতে আটকে থাকা রিলেশনশিপ বেশিদূর এগোয় না। বেপরোয়া, সম্পর্কে প্রত্যাশিত কিছু না ঘটলেও সিচুয়েশন বিবেচনায় না নিয়ে তাৎক্ষণিক চিন্তা ও আবেগে ভর করে ‘ব্রেক-আপ’ করে বসে।
এছাড়াও যাদের যৌনসঙ্গী বেশি, তাদের ক্ষেত্রে সম্পর্ক কেবল মাত্র এক ধরনের খেলা। তাছাড়া সম্পর্কে অসন্তুষ্টি, গভীরতা কম, একে অন্যকে ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে সম্পর্কে ধোঁকাবাজি, ঠকবাজি ছাড়া আর কী-ই বা আশা করা যায়? রিলেশনশিপে যাওয়ার আগে সঙ্গীকে যথাসম্ভব চিনে, জেনেই এগোতে হবে। নইলে ভালোর ভালো মন্দে ঢেকে জীবনকে বিষিয়ে তুলতে পারে।
পিবিএ/বাখ