অবৈধভাবে মাটি বিক্রির অর্থ সরকারি ফান্ডে জমা দিবে চায়না গ্রুপ!!

পিবিএ,বাগেরহাট : বাগেরহাটে শরনখোলায় অবৈধ ভাবে লুটে নেওয়া মাটির অর্থ অবশেষে দিতে বাধ্য হচ্ছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না গ্রুপ ।

সম্প্রতি সরকারি জমির মাটি ক্রয় করা ছাড়াই অবৈধভাবে উত্তোলন করে নেওয়ার অভিযোগে চায়না গ্রুপের খনন কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন।

পরবর্তীতে, ইউএনওর সাথে এক বৈঠকে বসে উপজেলার বান্দাঘাটা ও পশ্চিম রাজৈর এলাকার সরকারি খাল থেকে উত্তোলন কৃত মাটির মূল্য পরিশোধের কথা স্বীকার করেন চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দ্বায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা ।

অনুসন্ধানে জানাযায়, ঝড় ,জ্বলোচ্ছাস ও বন্যা সহ প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগের হাত থেকে উপকুলবাসীকে রক্ষায় ২০১৭ সালে বলেশ্বর নদী সংলগ্ন ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩ কিঃ মিঃ দৈর্ঘ্যর বাঁধ নির্মান কাজ শুরু করেন (সি এইচ. ডব্লিউ) নামের চায়নার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান । উক্ত বাঁধ নির্মান কালে মাটির ব্যাপক প্রয়োজন দেখা দেয় ।
প্রসাশনের অনুমতি ছাড়াই উপজেলাবাসীর পানির প্রধান উৎস রায়েন্দা সরকারি খালের বান্দাঘাটা এলাকা থেকে বাঁধের কোল ঘেষে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে গভীর কুপ তৈরী করেন। সেখান থেকে কয়েক লক্ষ ঘনফুট মাটি অবৈধ ভাবে লুটে নেয় । লুন্ঠিত ওই মাটির বাজার মূল্য লাখ লাখ টাকা বলে স্থানীয়রা জানায় । অপরদিকে, অতিরিক্ত গভীরতার কারনে বান্দা ঘাটা এলাকায় নির্মিত রায়েন্দা খালের প্রধান সুইজ গেইটটি সহ বাঁধের ওই এলাকা চরম ঝুকিপুর্ন হয়ে উঠেছে।

নাম গোপন করার শর্তে, বাঁধ সংলগ্ন এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও তাদের সহযোগীরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশ করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরকারি খাস জমি , খাল, বিল ডোবা ও নালা সহ বাঁেধর পাশ থেকে হাজার হাজার ঘনফুট সরকারি জমির মাটি অবৈধ ভাবে বিক্রি করে তারা ইতমধ্যে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছেন।
সম্প্রতি বান্দাঘাটা ও পশ্চিম রাজৈর এলাকার দুটি সরকারী খালের মাটি চায়না ঠিকাদারদের কাছে ১০ লক্ষাধিক টাকা হাতানোর পায়তারা শুরু করে। বিষয়টি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ আজমল হোসেন মুক্তা ও ইউএনওর অবগত হলে তা বন্ধ করেন।

চায়না গ্রুপের মাটি ক্রয়কারী প্রতিনিধির পক্ষে মোঃ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন , চায়না কোম্পানী কয়েক বছর যাবৎ ৩৫/১ পোল্ডারের বেরীবাঁধে কাজ করছেন । সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের অনুমতি নিয়েই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাটি গুলো সংগ্রহ করা হয়েছে । এছাড়া সরকারি ফান্ডে টাকা জমা দেওয়ার দ্বায়িত্ব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, চায়না গ্রুপ সম্প্রতি ২টি সরকারি খালের মাটি অবৈধ ভাবে তুলে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। বিষয়টি আমি স্থানীয়দের মাধ্যমে অবগত হয়ে মাটি খননের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেই । পরে ঠিকাদার সংশ্লিষ্টরা আমার সাথে বৈঠক করেছেন এবং সম্পুর্ন মাটি পরিমাপ করে তার টাকা পরিশোধের কথা স্বীকার করেছেন । উক্ত টাকা পেলেই সরকারী ফান্ডে জমা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি মাটি অবৈধ ভাবে বিকিকিনির সাথে জডিতদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হবে ।

পিবিএ/শেখ সাইফুল ইসলাম/মোআ

আরও পড়ুন...