‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে’ বলে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে হুমকি দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। গত সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ নিন্দা জানানোর পাশপাশি ৬ সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে বার্তা দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
৬ সিদ্ধান্ত হলো:-
১. গত ১৬ সেপ্টেম্বর স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে সোমবারের সভাকে জানান মহাসচিব।
১. পার্বত্য জেলাগুলোতে উদ্ভূত সংঘাতের ঘটনাগুলোতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সভা মনে করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের অংশ হিসাবে এ ধরনের সংঘাতের সৃষ্টি করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ঘটনা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ। ঘটনাগুলো হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সভা মনে করে, পার্বত্য জেলাগুলোতে শান্তি স্থাপনের জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল, পার্বত্য জেলায় সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের একটি জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা জরুরি। এ লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
৩. পতিত ফ্যাসীবাদ ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও ‘মবলিংচিং’ এর মতো ঘটনা ঘটিয়ে শিল্পাঞ্চল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সভা মনে করে, এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগে সব গণমাধ্যমে জন সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের প্রচারপ্রচারণা বাড়ানো প্রয়োজন। এ সব সমাজবিরোধী এবং ঐক্য বিনাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি বলে সভা মনে করে।
৪. সভায় সম্প্রতি ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে’ বলে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে হুমকি দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা করা হয় এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অন্তরায় হিসাবে কাজ করার বিষয় ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতৃবৃন্দকে এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের মন্তব্যে কঠোর সমালোচনা এবং বিরত থাকার আহ্বান জানানোয় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
৫. সভায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করার আহ্বান জানানো হয়। সভা প্রহসনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করে পতিত সরকারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রেখে অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
৬. সভা শেষে সভাপতি সবাই ধন্যবাদ জানিয়ে সভা মুলতবি করেন।