অর্থনৈতিক, যোগাযোগ ও বিদ্যুতে বাজেট বরাদ্দ রাখার দাবী গোপালগঞ্জবাসীর

 

পিবিএ,গোপালগঞ্জ: হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজরিত জেলা গোপালগঞ্জ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে অন্যান্য জেলা থেকে অনেকটাই উন্নয়নের পিছিয়ে রয়েছে এ জেলা। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সরকার গঠনের পর গোপালগঞ্জ জেলাকে একটি আধুনিক জেলা হিসাবে রুপান্তর করতে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। তবে এ জেলা অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসর না হওয়ায় রয়েছে বেকার সমস্যা। সেই সাথে কৃষি, শিক্ষা, সড়ক ও বিদ্যুতে বরাদ্দ রাখার দাবী সাধারন মানুষের।

জানাগেছে. ১ হাজার ৪৮৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ জেলা। এ জেলার ৫টি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা ও ৬৭টি ইউনিয়ন নিয়ে তিনটি সংসদীয় আসন গঠিত। এ আসনটি রয়েছে ভিআইপি তালিকায়। এ জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ। যার অধিকাংশ লোক কৃষি ও মৎস পেশার সাথে জড়িত।

বাংলাদেশ স্বাধীনতাত্তোর ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল গোপালগঞ্জ। ৯৬-তে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসে উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু করলেও ২০০১ সালে বিএনপি জামাত ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের যাত্রা বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসলে আবারো উন্নয়নের ধারায় ফেরে গোপালগঞ্জ।

আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১০ বছরের রেল, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, চক্ষু হাসপাতালসহ ব্যপক উন্নয়ন ঘটলেও এ জনপদে বেকারত্ব দূরীকরনে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। তবে হাতে নেয়া উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নসহ আগামী বাজেটে অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে শিল্প কলকারখানা তৈরী, বেকারত্ব দূরীকরন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ও কৃষিবান্ধব বাজেট দেয়ার দাবী জেলাবাসীর।

মোল্ল্যা নিউটন বলেন, বেকারত্ব দূরীকরণে গোপালগঞ্জে কোন শিল্প কলকারখানা তৈরী হয়নি। আগামী বাজেটে যেন জেলার বেকারত্ব দূরীকরেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিল্প কলকারখানা তৈরীতে বাজেট প্রনয়ন করা হয়।

মোহাম্মদ সোহেল রহমান বলেন, এখনো জেলার অধিকাংশ এলাকায় শিক্ষার শুরূতে শিক্ষার্থীরা ঝড়ে যাচ্ছে। যে কারেন আগামী বাজেটে যেনে শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বাজেট দেয়া হয়। যাতে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারে।

রিফাত সরদার বলেন, দেশের রেকর্ড পরিমান বিদ্যূত উতপাদান হলে এখনো মাঝে মাঝে মাঝে গোপালগঞ্জে সীমাহীন লোডশেডিং হয়। ফলে সাধারন মানুষকে দূর্ভোগে পড়তে হয়। তাই আগামী বাজেটে যেন বিদ্যুত বিভাগে বিশেষ বরাদ্দ রাথা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম বলেন, দেশ এখন সুষম বাজেট প্রনয়ন করাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশষে করে কৃষি ও শিক্ষাখাতে ভতুকী দিলে এ দেশের উন্নয়ন দ্রুতভাবে ত্বরানিত হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো: খসরুল আলম বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা পর এখনো গোপালগঞ্জবাসী ক্ষত শুকাতে পারেনি। বারবার অবহেলিত থাকতে হয়েছে। শিল্প প্রতিষ্ঠান, উদ্যোগতামূলক কর্মকান্ড যার মাধ্যমে গোপালগঞ্জ বাসীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায় সেদিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। সুসমবন্টন করা গেলে ও সরকারের গৃহীত উন্নয়ন কর্মকান্ডে বরাদ্দ আরো বৃদ্ধি করলে বাংলাদেশের মধ্যে একটি মডেল জেলা হয়ে উঠবে গোপালগঞ্জ। সেই সাথে বাংলাদেশের বুকে গোপালগঞ্জ উন্নত, সমৃদ্ধ ও কর্মক্ষম জেলা হিসাবে অবস্থান আরো দৃঢ় হবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।

পিবিএ/ বিএস/জেডআই

আরও পড়ুন...