গাইবান্দা, কুড়িগ্রাম ও বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত। ব্রম্মপূত্র, যমুনা, ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কোথাও কোথাও বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয় প্লাবিত করেছে। ডুবেছে ফসলি জমি।
আমাদের গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানিয়েছেন উজান থেকে আসা পানির ঢলে বালাসিঘাটার পুরোনা বাধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত। আর ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে বিপদসীমার উপর ২৪ সে.মি. পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
একদিকে করোনা মহামারিতে মানুষ বিপর্যস্ত। চাকরি বাকরি হাড়িয়ে অনেকেই গ্রামে ফিরেছে। গ্রামে গিয়েও স্বস্তি নেই। মানুষের ঘরে পানি, রাস্তা-ঘাট পানির নীচে, ফসলি জমি বিনষ্ট, মাছের খামার ভেসে যাচ্ছে। প্রকৃতি তার ভয়াল রুপের কোন দিক দেখাতেই ছাড়ছে না। রোগ বালাই, ঝড়, বণ্যা, খরা একের পর এক প্রাকৃতিক দূর্যোগ।
সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে। মানুষ এবং প্রকৃতির সহবস্থানে কিভাবে প্রকৃতির ক্ষতি সাধিত হয়েছে। যার কারণেই এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এটা উপলব্দি করতে হবে।
বন্যার কারণ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, ফসলি জমি ভরাট, পলি জমে নদীর নাব্যতা হারানো, আবার কোথাও অপরিকল্পিত নদী খনন, উজানে নদীর গতিপথ রুখে দেয়া বা বাধ দিয়ে গতিপথ পাল্টানোসহ নানান ভাবে প্রকৃতির সাথে বিরুপ আচরণ করা হচ্ছে। আর প্রকৃতি যখন বিরুপ আচরন শুরু করে তখন এর পরিণতি কি হয় তা বেশ ভালভাবেই পৃথিবী টের পাচ্ছে।
প্রকৃতি নিয়ে মানুষকে নতুন করে ভাবতে হবে। এটা কোন অঞ্চল বা টেরিটোরিতে সীমাবদ্ধ নয়। বৈশ্বিকভাবে সবাই কোন না কোনভাবে একে অন্যের সাথে সম্পৃক্ত। নদীর উজানের দেশ সুবিধা লাভে বাধ করেছে। আজ সেখানেও বন্যার থাবা। আর ভাটিতেতো আছেই। কেহই প্রকৃতির অমোঘ বিচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
আপদকালীন সময়ে বণ্যার্তদের পাশে দাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বন্য কবলিত এলাকার মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসতে।
তবে পাশাপাশি বণ্যার কারণ চিহ্নিত করাও জরুরী। এভাবে প্রতিবছরই যদি প্রাকৃতিক বিপর্যয় জনসাধারণের জীবনে আসে তাহলে মানুষের আর থাকে কি। প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। উন্নয়ন অবশ্যই দরকার। তবে তা প্রকৃতির নিয়মে হোক। পরিবেশ টিকিয়ে প্রতিবেশ উন্নত হোক। এখন মানুষ এবং প্রকৃতি প্রতিপক্ষ হিসেবে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত। না এটা চলবে না। একসাথে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই সবকিছু হবে সুন্দর ও স্বাভাবিক।
পিবিএ/শতাব্দী আলম