আগুনে পোড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে মালামাল সরাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

পিবিএ, ঢাকা : গুলশান ১নং ডিএনসিসি কাঁচাবাজারে মিজানের দোকানে বিক্রির জন্য রাখা বিপুল পরিমাণ চালসহ বিভিন্ন পদের খাদ্যসামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সে সব পোড়া মাল সরাতে সরাতে তিনি বলছিলেন, আমার সাজানো সংসারটা আগুনে শেষ হয়ে গেছে। আগের আগুনেও (২০১৭ সাল) পুড়েছিলাম, এবারও পুড়লাম। আগের ক্ষতিই পুষিয়ে উঠতে পারিনি। এবার কী করব? বলতে বলতে পোড়া মাল সরাচ্ছিলেন আর কপালের ঘাম মুছছিলেন ব্যবসায়ী জসিম।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুর রাজধানীর গুলশান ১নং ডিএনসিসি কাঁচাবাজার ও সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মালামাল সরাতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। পুলিশের তত্বাবধায়নে ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মচারীদের সাথে করে স্ব স্ব দোকানে প্রবেশ করেন এবং পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া মালামাল সরাতে শুরু করেন। ক্রোকারিজ, মনোহরী, তৈরি খাদ্য, আসবাবপত্র, শাকসবজি, মাছ-মাংস, চাল-ডালসহ সব ধরনের দোকানের মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

সবজি বিক্রেতা ইমরান বলেন, বিভিন্ন হোটেলে সবজি সাপ্লাই দিতাম। আজও সাপ্লাই দেয়ার কথা ছিল। গত রাতে দুই লাখ টাকার মাল তুলছিলাম। কিন্তু সবশেষ মাল তো গেলই, দোকানও গেল। বসারই জায়গা নাই।

ক্রোকারিজ পণ্য ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, সমিতি থেকে লোন করে ৩ লাখ টাকার মাল এক সপ্তাহ আগে তুলেছিলাম। এখন সব শেষ। সরেজমিনে দেখা গেছে, রহমত আলীর ক্রোকারিজ পণ্যগুলো আগুনে পুড়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। প্লাস্টিকের বালতি, মেলামাইন-স্টিলের প্লেট, চামচ, বাটি, মগ, গ্লাস- সব ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে।

আরেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, সব কিছু পুড়ে ছাই গেছে। এখন যা আছে তা কেজি দরে ভাঙারি দোকানে বিক্রি ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

পুড়ে যাওয়া গুঁড়া দুধের কৌটা-বিস্কুটের কৌটা সরাচ্ছিলেন একটি দোকানের কর্মচারি ইউনুস। তিনি বলেন, মালিক গেছে ভ্যানগাড়ি আনতে। এসব ভাঙারি দোকানে নিয়া যাইব। দেখা যাক বিক্রি করা যায় কি-না।

মার্কেট প্রাঙ্গণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বসে আছেন। সেখানে পাওয়া গেলো গুলশান ১নং ডিএনসিসি কাঁচা বাজার ও সুপার মার্কেট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি দ্বীন মোহাম্মদকে। তাকে কিছু প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন আপনাদের কিছু বলতে পারছি না। কিছুক্ষণ পর মেয়র মহোদয়ের সাথে মিটিং আছে। তারপর আপনাদের ডেকে সব জানানো হবে।

মার্কেটের সামনে স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে কর্তব্য পালন করছেন গুলশান থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব আলম। তিনি বলেন, ২১২টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত ১৩৫জন লিপিবদ্ধ করে গেছেন। বাকিগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে হয়, সেজন্য এই কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।

শনিবার (৩০ মার্চ) ভোরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মালিকানাধীন গুলশান ১নং ডিএনসিসি কাঁচা ও সুপার মার্কেটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...