আগুন দেওয়ার দুদিন আগে কারাগারে সিরাজের সঙ্গে দেখা করে খুনিরা

নুসরাতের খুনিরা
খুনের নির্দেশদাতা অধ্যক্ষ সিরাজ (উপরে), হাফেজ আব্দুল কাদের, শামীম ও নূরুদ্দিন (বাঁ দিক থেকে)

পিবিএ,ঢাকা: মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার তদন্তে নিয়োজিত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, আগুন দেয়ার ঘটনার দুদিন আগে অধ্যক্ষ সিরাজের সঙ্গে কারাগারে গিয়ে দেখা করেছিলো অভিযুক্ত খুনিরা।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে পিবিআই সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিআইজি ।

তিনি জানান, গত ৬ এপ্রিল সকালে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরিক্ষার্থী রাফীর গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা চার দুর্বৃত্ত। পরে সেখান থেকে তারা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। ৪ এপ্রিল ওই মাদ্রাসার ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, নূর উদ্দিন, হাফেজ আবদুল কাদেরসহ কয়েকজন কারাগারে গিয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার সঙ্গে দেখা করে।’

ডিআইজি বলেন, ‘নুশরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দেওয়ার আগে অনেক কাহিনী আছে। সবকিছু তদন্তের স্বার্থে এই মুহুর্তে বলা ঠিক হবে না। তবে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার মুক্তির পক্ষে যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীমসহ কয়েকজন জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয় ৪ এপ্রিল। স্মারকলিপি দিয়ে ওই দিনই কারাগারে সিরাজ উদ দৌলার সঙ্গে দেখা করে। সেখানে গিয়ে রাফিকে হত্যার নির্দেশ নিয়ে আসে।’

পিবিআই’র ডিআইজি আরও বলেন, ‘সোনাগাজী মাদ্রাসার পাশে দু’টি হোস্টেল আছে। সেখানকার পশ্চিম হোস্টেলে ছিল নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামিম, জাবেদ হোসেন, হাফেজ আবদুল কাদেরসহ পাঁচজন। পরদিন ৫ এপ্রিল তারা সেখানে বসে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনাতে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, রাফিকে পুড়িয়ে মারা হবে। এই সিদ্ধান্ত তারা নেয় দু’টি কারণে। প্রথমত, মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ আলেম সমাজকে হেয় করেছে নুশরাত। দ্বিতীয়ত, শাহাদাত দফায় দফায় প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে রাফিকে। কিন্তু রাফি শামিমের সেই প্রস্তাব বার বার প্রত্যাখ্যান করে। এ কারণে রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে মারার প্রথম প্রস্তাবটি দেয় শামীম। পরিকল্পনার বিষয়টি পরে আরও পাঁচ জনের সঙ্গে শেয়ার করে তারা। তাদের মধ্যে দু’জন মেয়ে। তারা ওই মাদ্রাসারই ছাত্রী। সেই দুই মেয়ের একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তিনটা বোরখা ও কেরোসিন আনার জন্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মেয়েটি বোরখা ও কেরোসিন সরবরাহ করে শামীমের কাছে। এরপরই তারা ৬ এপ্রিল পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাফির শরীরে আগুন দেয়।
পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...