আন্দোলনেই খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র মুক্তি পাবে: ফারুক

পিবিএ,ঢাকা: আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম খালেদা জিয়া ও দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক । তিনি বলেন, মানববন্ধন আর ছোটখাটো সভা-সমাবেশ করে দেশনেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না ‘আর মানববন্ধন নয়, এবার রাস্তায় নে‌মে পড়ুন। কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলুন। বেগম জিয়াকে মুক্ত করেই এবার ঘরে ফিরতে হবে।’

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও জননেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

জয়নুল আব‌দিন ফারুক ব‌লেন, ‘আমি মনে করি বেগম খালেদা জিয়া ৫ বারের প্রধানমন্ত্রী হতেন, যদি ২০১৪ ও ২০১৯ সালে নির্বাচন হতো। কিন্তু সেই নেত্রীকে কারাগারে আটকে রেখে মধ্যরাতের নির্বাচন করে বর্তমান সরকার বলপ্রয়োগভাবে ক্ষমতায় বসেছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে যে অরাজক-নৈরাজ্যকর অবস্থা চলছে- এই মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে বাংলাদেশের এমন কোনও শক্তি নাই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁকে রুখতে পারে।’

‌ফারুক আরও বলেন, ‘যে দেশের অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেন- ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যাংক খালি করে দেয়া হয়েছে সেই দেশে আর কী থাকে! যারা ক্যা‌সি‌নোর টাকা নিয়েছে তাদের সেই টাকা সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের ভাষায় অবৈধ হলেও এখনও রাঘব বোয়ালদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। কারণ, বর্তমান সরকারের তো কোনও জবাবদিহিতা নেই। তারা তো জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়।’

তিনি বলেন, ‘যদি শক্তিশালী দলগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে স্বৈরশাসক আরও কঠিনভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই বলি, আর মানববন্ধন নয়। এবার কঠোর আন্দোলন নিয়ে রাস্তায় নামুন।’ সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা ভেবেছেন বেগম খালেদা জিয়াকে আটক রাখলে আন্দোলন হবে না। আন্দোলন হবে, আর সে আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিও হবে। দেশে গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠিত হবে।’

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের ভাষায় গত ১০ বছর ধরে তারেক রহমান ক্যা‌সি‌নোর টাকা নেয়। তাহলে তো তিনি বড় নেতা। তাহ‌লে তার মামলাগুলো প্রত্যাহার করেন না কেন? তিনি য‌দি লন্ডনে বসে আপনাদের কাছ থেকে টাকা নেয় তাহলে তার মতো একজন বড় নেতার দলে আপনারা যোগ দেন না কেন? এসব ভুয়া কথা বলে মানুষের মুখ অন্যদিকে নেয়া, মানুষের মন অন্যদিকে নেয়া, আন্দোলন প্রতিহত করার চেষ্টা করেও লাভ হবে না। খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলন হবেই।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছেন, মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছেন, শেয়ারবাজার লুট করেছেন- কিন্তু শেয়ারবাজার লুটকারীদের লিস্ট তৈরি করতে পারেননি, ব্যাংক লুট করেছেন, সাগর-রুনি হত্যা মামলার বিচার করতে পারেনি। দেশের মানুষকে বোকা মনে করবেন না। দেশের মানুষ সব বোঝে। আমরা সংসদে নাই। সংসদে থাকলে তেলের দাম গ্যাসের দাম আর এসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হতো না। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হতো তাহলে আমরা সংসদে ঠিকই যেতাম, ক্ষমতায় ঠিকই যেতাম।’

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা নাসির উদ্দিন হাজারীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক প্রিন্সিপাল শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দল কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো: মাইনুল ইসলাম, হাজী মোজাম্মেল হক মিন্টু সদাগর, মির মমিনুল ইসলাম সুজন, জাতীয় গণতান্ত্রিক মঞ্চের সভাপতি ইসমাইল তালুকদার খোকন, কৃষকদল কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রাজি ও মো. মজিবুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...