প্রয়াত চিত্রনায়িকা প্রিন্সেস টিনা খানের কথা আমাদের সবারই মনে আছে। ১৯৮৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত এই অভিনেত্রীর যোগ্য উত্তরসূরী তার মেয়ে রিমু রোজা খন্দকার। অভিনয় দক্ষতা এবং স্বতন্ত্র্য ব্যক্তিত্ববোধের কারণে ইতিমধ্যেই তিনি আলোচিত। বার্তা সংস্থা পিবিএ-এর পক্ষ থেকে অভিনয়ের নানা প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা বলেছেন জিয়াউল জিয়া–
প্রশ্ন : আপনার বর্তমান ব্যস্ততা সম্পর্কে জানবো–
রিমু রোজা খন্দকার : এ মুহূর্তে তিনটা ধারাবাহিক নাটক করছি। নাটকগুলো হলো, ‘তুমি আছো তাই’, ‘ডি টুয়েন্টি’ এবং ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’। শুট চলছে সাগর জাহানের রচনা, রতন হাসান এবং এ আর আকাশের পরিচালনায় ধারাবাহিক ‘আক্কেলগঞ্জ হোম সার্ভিস’-এর। পাশাপাশি সিঙ্গেল নাটকের ব্যস্ততা তো রয়েছেই। সবমিলিয়ে ব্যস্ততা এ মুহূর্তে এরকমই।
প্রশ্ন : আপনি বিজ্ঞাপনচিত্রে অনুপস্থিত কেন ?
রিমু রোজা খন্দকার : এটার কারন আমি নিজেও জানিনা। শুধু বলবো, আমি লবিং-লিয়াজো করতে জানি না। নিয়ম করে পার্টিতে হাজির থাকতে পারি না। অঅমি অভিনয় কর্মী। অভিনয় নিয়েই মাথা ঘামাতে চাই। এতে করে যদি কিছু হয় তো হবে না হলে কোন আফসোস নেই।
প্রশ্ন : আপনার প্রায় ১০ বছরের ক্যারিয়ার। আরও দূর যেতে পারতেন। এক্ষেত্রে ধীর গতি কেন ?
রিমু রোজা খন্দকার : প্রথমত আমি মধ্যে একটা ব্রেক নিয়েছিলাম ব্যক্তিগত কারণে। এটাতে আসলে একটু হলেও পিছিয়ে গিয়েছি। তবে আমার কামব্যাক করাটা অসেক সহজ হয়েছে যার জন্যে তিনি হলেন সাগর জাহান। সত্যিকার অর্থেই তিনি বড় হৃদয়ের মানুষ। আমার ফিরে আসার ক্ষেত্রে তিনি যেভাবে সাহায্য করেছেন তাতে আমি তার প্রতি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। আরও দূর যেতে পারিনি তার কারন, আমার কোন গডফাদার-গডমাদার নেই। মিডিয়াতে মাথার উপর ছায়া বলতে যেটা বোঝায় আরকি। তবে, এ নিয়ে কোন আক্ষেপও নেই। অভিনয় তো করছি-ই, তাই না? এটাই তো করতে চাই। সো, নো প্রবলেম।
প্রশ্ন : ফিল্মের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাই–
রিমু রোজা খন্দকার : একজন অভিনেত্রী হিসেবে আমি তো পুরোপুরি প্রস্তুত এক্ষেত্রে। ভাল স্ক্রিপ্টে, ভাল চরিত্রে ডাক পাবো-ব্যস করবো। সবচেয়ে বড় মাধ্যম বলে কথা। আগ্রহের কমতি নেই। এমন ছবি যদি হয় যে, সেখানে পুরো ছবিতে অঅমার শুধু একটা দৃশ্য রয়েছে কিন্তু সেটা উল্লেখযোগ্য তবে করতে আপত্তি নেই। গল্পহীন ছবির শ্রেষ্ঠাংশেও থাকতে চাই না। হিসেবটা এরকম।
প্রশ্ন : কোন উপন্যাসিক চরিত্রে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছেন ?
রিমু রোজা খন্দকার : সাতকাহনের ‘দীপাবলী’ এবং গর্ভধারিনী’র ‘জয়ীতা। এ চরিত্র দু’টির প্রতি ব্যাপব ফ্যাসিনেশন রয়েছে।
প্রশ্ন : অভিনেত্রী হিসেবে কতোটা সাহসী আপনি ?
রিমু রোজা খন্দকার : শতভাগ সাহসী বলতে পারেন। তবে সাহস দেখানো মানেই কাপড় খোলা নয়। একই বিষয় অন্যভাবে, প্রতীকী উপায়ে দেখানো সম্ভব। তারপরও গল্পের প্রয়োজনে, অবস্থার বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলতে যতটুকু ইন্টিমেট হতে হবে ততটুকু হবো। এক্ষেত্রে কার্পণ্য করবো না।
প্রশ্ন : আপনি নিজেকে অভিনয় কর্মী বলে দাবি করলেন। এরকম অভিনয় কর্মীদের এদেশে মূল্যায়ন হবে কখনো ?
রিমু রোজা খন্দকার : অবশ্যই হবে। পলিটিক্সে অলরেডি শুরুও হয়েছে। এবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করা নেতা-কর্মীদের সম্মানিত করেছে। মিডিয়ায়ও এটা হবে। পরিচালকরা অবশ্যই ভাল অভিনয় শিল্পীদের একটা তালিকা করবেন যারা নিবেদিত প্রাণ। তখনই আমাদের মূল্যায়ন হবে।
প্রশ্ন : ১০ বছরের ক্যারিয়ারে আপনার প্রাপ্তি কি?
রিমু রোজা খন্দকার : দর্শকদের ভালবাসা। আমি তো কাজ করি খুবই কম। তারপর কোথাও গেলে মানুষ আমাকে চিনতে পারে, আমার সঙ্গে সেলফি তোলে কিংবা বলে ‘অমুক নাটকে বেশ ভাল অভিনয় করেছেন’-এটাই আমার বড় প্রাপ্তি। কোন পদক বা প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির চাইতেও দর্শকদের এই অকৃত্রিম ভালবাসা আমার কাছে মূল্যবান। এটা নিয়েই বাঁচতে চাই।
পিবিএ/জিজি