পিবিএ,কুষ্টিয়া: ছোট বেলায় রাতকানা রোগী ছিলেন। এখন দিনরাত সব সময় চোখে ঝাপসা দেখেন। আর তাই নিজের কাজকর্মগুলো আর আগের মতো করতে পারেন না মো. শফি (৩৫)। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই জীবন-জীবিকার তাগিদে একমাত্র ছেলে শুভকে (১১) সঙ্গে নিয়ে ভ্যান চালানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করছেন তিনি।
কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভার সবেদ আলীর ছেলে শফির কথা বলছিলাম। শফি এক সময় মিরপুর বাসস্ট্যান্ড ও জিয়া সড়ক থেকে বাসে করে আসা যাত্রীদের উপজেলা ও ঈগল চত্বরে আনা নেওয়া করতেন। কিন্তু দিনকে দিন তিনি চোখে না দেখায় এই কাজটি এখন আর আগের মতো করতে পারেন না।
তাই বাধ্য হয়েই সংসারের হাল ধরেতে ছেলেকে সহযোগী বানিয়ে চলছে তার এই ভ্যান চালানোর কাজে। এ থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই চলছে তাদের সংসার।
তবে বাবাকে সহযোগিতা করতে গিয়ে চতুর্থ শ্রেণি থেকেই ঝরে পড়েছে শুভ। যে বয়সে বইখাতা নিয়ে পড়ালেখা করার সময়, সে বয়সে শুভ নিজেই ভ্যান চালিয়ে সংসার চালানোর চেষ্টা করছে।
শফি বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আমার রাতকানা রোগ হয়েছিল। সে সময় এক কবিরাজের কাছে গিয়ে চিকিৎসাও করিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সুফল পায়নি। এখন ধীরে ধীরে একেবারেই চোখে দেখতে পাই না। তাই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যান চালাই। সেই টাকা দিয়ে সংসার চালাই।’
তিনি বলেন, ‘ছয় মাস আগেই ভ্যানটি কিনেছি। কিন্তু ১৫ হাজার টাকা ঋণ এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। প্রতিদিন যা আয় হয় তা দিয়ে কোনো মতে সংসার খরচ চলে।’
শফি আরও বলেন, ‘অভাবের সংসার, তাই ছেলেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্তপড়ালেখা করিয়েছি। তবে শুভর ইচ্ছা থাকার পরেও তাকে পড়ালেখা ছেড়ে দিতে হয়েছে শুভ বললো আমার বুঝি লেখা পড়া হলোনা।
পিবিএ/কেএস/এফএস