আম্ফান অমাবশ্যা তিথিতে আসছে, জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

পিবিএ ডেস্ক: ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল শতাব্দীর প্রলয়ংকরি যে ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার-চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী উপকূল জুড়ে আঘাত হেনেছিল সেই সময় ছিল পূর্ণিমা তিথি। পূর্ণিমা তিথিতে সাগর ছিল উথাল-পাথাল। এজন্যই সাগরের ২৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস ২১০ কিলোমিটার বাতাসের সঙ্গে সেই রাতে বিস্তীর্ণ উপকূল জুড়ে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল।

আর এবার সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের সম্ভাব্য আঘাতের সময়কালটিও পড়েছে অমাবশ্যার তিথিতে। কক্সবাজার উপকূলের প্রবীণ লোকজন জানান, চন্দ্র মাস নিয়েই সাগরের পানির জোয়ার-ভাটার সম্পর্ক রয়েছে। প্রতি মাসে পূর্ণিমা তিথিতে একবার সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। অনুরূপ অমাবশ্যা তিথি নিয়ে আরেকবার বাড়ে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি।

ঘূর্ণিঝড় যখন পূর্ণিমা ও অমাবশ্যা তিথি সামনে নিয়ে আঘাত হানে তখন সঙ্গত কারণেই সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের পানি বেড়ে যায়। উপকূলের প্রবীণ লোকজন অমাবশ্যা তিথি সামনে নিয়ে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আগমনকে এজন্য শংকার চোখে দেখছেন। কেননা মঙ্গলবার ২৫ রমজান অতিক্রম করাকালীন সময়েই সাগরে অমাবশ্যা তিথির পানি বাড়তে শুরু করেছে।

এমনকি মঙ্গলবার দিনের বেলার জোয়ারের পানি তিথিগত কারণেই স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় তীরবর্তী এলাকা সয়লাব করে দিয়েছে। কক্সবাজারের উপকূলীয় ও দ্বীপাঞ্চলের লোকজন এসব কারণে আম্ফানেও জলোচ্ছ্বাসের পানি বৃদ্ধির আশংকা করছেন। কেননা আজ বুধবার থেকে সাগরে অমাবশ্যা তিথির পানি আরো বৃদ্ধি পাবে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড়-আম্ফানের প্রস্তুতি উপলক্ষে কক্সবাজার জেলার ৮টি উপজেলায় ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত নৌযান ও সড়কযানের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। জেলায় ৮৮টি জরুরি চিকিৎসা দলও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) কক্সবাজারের ৭১টি ইউনিয়নে তাদের ৬ হাজার ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রেখেছে। এছাড়াও রোহিঙ্গা শিবিরেও ৩ হাজার ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও রোহিঙ্গা শিবিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সম্ভাব্য আঘাত মোকাবেলায়।

সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আঘাত মোকাবেলায় জেলার উপকূলীয় এলাকায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোকে আশ্রয় নেয়ার উপযোগীও করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনও ইতিমধ্যে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খুলেছে। কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর হচ্ছে-০১৭৫০০২৭০৮।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...