আলসেমি দূর করার আট উপায়

আলসেমি দূর করার আট উপায়

পিবিএ ডেস্কঃ আমরা সবাই কাজে কর্মে কিছুটা ঢিলেমি করি। কিন্তু দীর্ঘায়িত ঢিলেমি বা অলসতা শরীরের জন্য খারাপ। কারণ এটি মানুষকে চাপে ফেলে দেয়। এমনকি চিকিৎসকের কাছে যেতেও বিলম্ব ঘটায়। এখানে আলসেমি বা ঢিলেমি দুর করার কয়েকটি পরামর্শ দেয়া হলোঃ-

মোটিভেশনের জন্য শুধু ইচ্ছাশক্তির ওপর নির্ভর নয়ঃ

ক্রীড়া মনোবিদ ইয়ান টেইলরের মতে মানুষ অনেক সময় মনে করে ইচ্ছাশক্তিই সবকিছু কিন্তু এটি সঠিক নয় বলেই মনে করেন তিনি।

“ইচ্ছাশক্তি বা আত্মনিয়ন্ত্রণ এক ধরণের মোটিভেশন কিন্তু এটিই সর্বোত্তম নয়,” তিনি বলেন।

তাই শুধু ইচ্ছা শক্তির ওপর নির্ভর না করে তিনি কাজের খারাপ দিকটিকে উপেক্ষা করাই শ্রেয় বলে মনে করেন।

বরং সেটিকে অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে হবে যা হবে লক্ষ্য অর্জনের একটি অংশ।

গবেষকরা বলছে লক্ষ্য অর্জনে ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট নয়

ফেলে রাখা কাজে ইতিবাচক কি আছে দেখুনঃ

ব্যর্থতার ভয় থেকে কাজ ফেলে রাখছেন?

শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুসচিয়া সিরোইস বলছেন, আলস্য বা সময় ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা সমস্যা নয়।

“আপনি যদি উদ্বিগ্ন হন এই ভেবে যে আপনি ব্যর্থ হবেন তাহলে কাজ ফেলে রাখার যুক্তি তৈরি হবে”।

এটা একটা বাজে চক্র তৈরি করতে পারে: বিলম্ব করার কারণে কাজ করার সময় কমে যাচ্ছে, যা ব্যর্থতার ঝুঁকি বাড়ায় এবং আপনাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে।

এসব এড়াতে কাজের ইতিবাচক দিকটি দেখুন: হয়তো কিছু শিখবেন বা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আনন্দ পাবেন।

অগ্রিম পরিকল্পনাঃ

আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আলসেমি করার একটি প্রবণতা তৈরি হচ্ছে আপনার মধ্যে তাহলে মানসিকভাবে একটি কৌশল নিন। কেউ যদি আপনাকে কোনো সপ্তাহান্তে কোনো মিটিং এর কথা বলে আপনি বরং বলুন মিটিংটি আজ সন্ধ্যায়ই সেরে ফেলার।

আমেরিকান মনোবিদ পিটার গলউইটজার এ কৌশলের ওপর ৯৪টি সমীক্ষা পর্যালোচনা করেন।

তার মতে যারা কৌশলটি অনুসরণ করে তারা অন্যদের চেয়ে লক্ষ্য অর্জনে ২/৩গুণ বেশি দৃঢ় থাকে।

চাপ কমানঃ

যতটা সম্ভব সহজ করুন।

সকালে দৌড়ানোর পরিকল্পনা থাকলে আগেই পোশাক ঠিক করে রাখুন।

কাজের পরিকল্পনা আগের রাতেই টেবিলে চূড়ান্ত করে রাখুন।

তাহলে প্রথমেই আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন যে, কি দিয়ে কাজ শুরু করবেন।

আর বাধাগুলো, যেমন স্ক্রিনে এলার্ট সরিয়ে ফেলুন।

ফোন মিউট করে রাখুন ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে লগ অফ করুন।

আমরা নিজের ওপর যতটা কঠিন হতে পারি, বন্ধুর ওপর ততটা পারিনা

নিজেকে পুরস্কৃত করুনঃ

কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাইটলিন য়ুলির নতুন এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে তাৎক্ষণিক পুরষ্কার কঠোর পরিশ্রম করতে উদ্বুদ্ধ করে।

জটিল কাজ ফেলে রাখা থেকেই আলসেমি শুরু হয়- তাই এর পাল্টা ব্যবস্থা হতে পারে যথাসময়ে কাজের পুরষ্কার।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা বলছে জিমে ব্যায়াম করার সময় অডিও বুকস দিলে তা ভালো কাজ করে। অর্থাৎ সেই তাৎক্ষণিক পুরষ্কার।

সুতরাং দেখুন আপনার ক্ষেত্রে কোনটি কাজ করে।

ভবিষ্যতের জন্য অধিকতর বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে উৎসাহিত করুনঃ

অনেকেই আমরা বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে আমরা অনেক সময় পাবো।

আমরা ভাবি আমরা সামনে আরও গোছানো, আরও অ্যাকটিভ হবো কিংবা এমন জীবন যাপন করবো সেখানে কোনো ভুল ত্রুটি থাকবেনা।

এটা অবশ্যই হবেনা। এসব কারণেই অনেক সময় আমরা বুঝিনা কাজ শেষ করতে কত সময় লাগবে। এটাকেই বলে পরিকল্পনাগত ভুল।

নিজের প্রতি সদয় হোনঃ

হাতে থাকা কাজ ঝুলিয়ে রাখলে অনেক সময় নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।

যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষার আগে পড়া ঝালিয়ে নিতে পারেনি তাদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা আলসেমি জনিত কারণে নিজেকে ক্ষমা করে দেয় তারা পরবর্তী সময়ে ভালো করে।

সিরোইস বলছেন আমরা নিজের ওপর মাঝে মধ্যে যতটা নির্দয় হই, বন্ধুদের ওপরও ততটা হতে পারিনা।

“তাই আমাদের নিজেদের প্রতিও কিছুটা সহমর্মিতা দেখানো উচিত”।

নিজের সম্পর্কে কথা বলুনঃ
আপনি যে ভাষা ব্যবহার করেন সেটিও একটি ভিন্নতা তৈরি করতে পারে।

ইয়ান টেইলর বলছেন এটা কাজ করে কারণ এটা আপনার ও আপনার আচরণের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি করে।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...