পিবিএ, ঢাকা : মানবিক বিবেচনায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়ার আবেদন জানিয়ে তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতে বলেছেন, মানবিক কারণে আমরা জামিনের আবেদন করেছি। আমরা তো আপনাদের কাছেই আসবো। আপনারা সর্বোচ্চ আদালত। উপরে আল্লাহ আর আপনারা ছাড়া আমাদের যাবার কোনো জায়গা নেই। এ সময় তিনি আরও বলেন, আর ছয় মাস কারাগারে থাকলে বেগম খালেদা জিয়া লাশ হয়ে ফিরবেন।
আজ আপিল বিভাগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার জামিন শুনানিতে তিনি এসব বলেন।
সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বিভাগে শুরু হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি। আদালতে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে শুরু হয় এর কার্যক্রম।
শুনানিতে জয়নুল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়ার প্রপার চিকিৎসা হচ্ছে না। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার।
তিনি দিন দিন পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। তার স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ভালো মানুষ কারাগারে যাওয়ার কয়েক মাস পরেই তিনি পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। আর ছয় মাস গেলে তিনি লাশ হয়ে ফিরবেন।
তিনি আদালতকে আরও বলেন, মানবিক কারণে আমরা জামিনের আবেদন করেছি। আমরা তো আপনাদের কাছেই আসবো। আপনারা সর্বোচ্চ আদালত। আপনাদের পরে আর কেউ নাই, আল্লাহ ছাড়া। তাছাড়া জামিনের ব্যাপারে আপনাদের সিদ্ধান্ত আছে। নারী, বয়স্ক, অসুস্থ এসব বিবেচনায় জামিনের বিষয়ে আপনাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে আপনারা জামিন দেবেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। তার উন্নত চিকিৎসা রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব। তিনি জামিন পেলে তো পালিয়ে যাবেন না।
এর আগে সকাল ১০ টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা খালেদার মেডিকেল রিপোর্ট প্রধান বিচারপতির কাছে দাখিল করেন। এরপর প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ গ্রহণ করে অফিসারদের খুলতে বলেন। বেঞ্চ অফিসার রিপোর্ট খুলে ফের প্রধান বিচারপতির কাছে দেওয়া হয়। এ সময় প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিরা রিপোর্টটি মনোযোগ সহকারে দেখেন। এরপর ১০ টা ৩০ মিনিটে বেগম জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন শুনানি শুরু করেন। প্রথমে তিনি আগের রিপোর্টটি পড়েন। এরপর প্রধান বিচারপতি নির্দেশক্রমে ১০ টা ৪২ মিনিটে লেটেস্ট রিপোর্ট পড়া শুরু করেন।
রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, এর আগে কখনো বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অবহিত করেনি। এমনকি তার আত্মীয়স্বজন কেউ অবহিত করা হয়নি। জনগণতো অনেক দূরের কথা। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় বেগম জিয়া রাজার হালে আছেন। সর্বশেষ তিনি বলেন, মানবিক ও স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে হলেও বেগম জিয়ার জামিন দেয়া হোক। এরপর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ ১১ টার দিকে ফের এজলাস ত্যাগ করেন। এরপর ১১ টা ৩৫ মিনিটে আবারও এজলাসে আসেন প্রধান বিচারপতি।
পিবিএ/জেডআই