আসামে নাগরিকত্ব নিয়ে আতঙ্ক ১০ লাখ মানুষ

পিবিএ ডেস্ক: আসামের চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক তালিকা প্রকাশ হতে যাচ্ছে আগামীকাল শনিবার (৩১ আগস্ট)। এতে নাগরিকত্ব হারানোর শঙ্কায় আছেন বাংলাদেশিসহ ১০ লাখের বেশি অভিবাসী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করায়, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিজেপি সরকার। রাজ্যটিতে যে কোনো বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশের জন্য প্রস্তুত ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম। শনিবারই বহুলপ্রতিক্ষীত ও বিতর্কিত এ তালিকা প্রকাশ করা হবে। নাগরিক তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য তিন কোটি ২০ লাখ মানুষ আবেদন করেন। কয়েক দফা খসড়া তালিকা প্রকাশ কোরে বাতিল করা হয় ৪২ লাখ আবেদন। যাদের অধিকাংশই বাংলাভাষী হিন্দু ও মুসলমান। পর্যাপ্ত কাগজপত্র না থাকায় পুনর্নিবন্ধনের জন্য আবেদনই করতে পারেনি ৯ লাখ মানুষ। যারা আবেদন করেছেন নাগরিকত্ব প্রমাণে হিমশিম খাচ্ছেন তারাও।

একজন বলেন, ‘নাগরিকত্বের জন্য মামলা করে, অর্থের অভাবে হতাশ হয়ে, আত্মহত্যা করেন আমার স্বামী। বাচ্চারা এখনো ছোট। অন্যের সহায়তায় চলি। নিজেদের কোনো জমিজমা নেই। তাদের নিয়ে কোথায় যাবো জানি না।’

আর একজন বলেন, ‘সঠিক কাগজপত্র দেয়ার পরও হেনস্তা করা হচ্ছে। যা মোটেও ভালো নয়। এগুলো মানসিক অত্যাচার।’

আরো একজন বলেন, ‘৩০ বছর ইন্ডিয়ান আর্মিতে থেকে দেশের সেবা করে, এখন নাগরিকত্বের জন্য ঘুরছি। এটা আমার জন্য খুবই লজ্জাজনক।’

অবৈধ বাংলাদেশিদেরও চিহ্নিত করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানিয়েছে গণমাধ্যম। এদিকে, নাগরিক তালিকা থেকে যারা বাদ পড়বেন, তারা ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নাগরিক তালিকা নবায়ন কমিটি সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা বলেন, ‘কেউ যদি নতুন তালিকা থেকে বাদ পড়েন, তাকে ফরনোর্স ট্রাইবুনালে আবেদন করে, প্রমাণ করতে হবে যে তিনি, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে থেকেই আসামের নাগরিক। ট্রাইবুনালের রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টেও যাওয়া যাবে।’

আসাম ছাত্র ইউনিয়ন প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য বলেন, ‘অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীরা আসামের আদিবাসীদের মানবাধিকার হরণ করছে। এখানকার চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। হুমকিতে আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতি।’

নাগরিক তালিকা প্রকাশ উপলক্ষ্যে রাজ্যে ২২০ প্লাটুন অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। যারা বাদ পড়বেন, তারা যাতে আসাম ছেড়ে পালাতে না পারেন- সেজন্য পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলোতে নেয়া হয়েছে কড়া নজরদারি।

১৯৫১ সালে আসামে প্রথম নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে ওই তালিকা নবায়ন শুরু হয়।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...