পিবিএ ডেস্কঃ নিজেদের অসাবধানতা ও অসতর্কতার কারণে যে সব অসুখ শরীরে দানা বাঁধে, তার মধ্যে অন্যতম মূত্রনালির সংক্রমণ।সাধারণত রেচনতন্ত্রের কোনও অংশে জীবাণুঘটিত সংক্রমণ হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, তাকেই ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ বলে। কিডনি, মূত্রনালি, মূত্রথলি বা একাধিক অংশেই এই ধরনের সংক্রমণ হতে পারে।
অনেকের ধারণা, সাধারণত মহিলারাই বোধ হয় এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। কিন্তু কিডনি বিশেষজ্ঞের মতে, ‘‘ইউরিনাল ট্র্যাক্ট ইনফেকশন মেয়েদেরই বেশি হয়, এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। আজকাল অসতর্কতার জন্য এই ধরনের অসুখে পুরুষরাও সংক্রমিত হন প্রায় পাল্লা দিয়ে। তবে এই সংক্রমণের শুরুতেই সাবধান হলে বিড়ম্বনা অনেকটাই কমে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই অসুখ নিয়ে আমরা সচেতন থাকি না বলে তা জটিল হয়ে পড়ে।’’
লক্ষণঃ সাধারণত, এই অসুখের প্রভাবে প্রস্রাবের রং বদলে যায়। বেশ কিছু দিন ধরে গাঢ় হলুদ বা লালচে প্রস্রাব হলে সচেতন হোন। প্রস্রাবের সময় জ্বালা বা ব্যথা অনুভব করেন অনেকে। এটিও সংক্রমণের দিকেই ইঙ্গিত করে।সংক্রমণের প্রভাবে অনেকের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে। বমি ভাবও থাকে অনেকের।
প্রস্রাবের বেগ এলেও প্রস্রাব না হওয়া বা প্রস্রাবের পরিমাণ অত্যন্ত কমে যাওয়াও আশঙ্কার কারণ।
পেটে ব্যথা যে হবেই সব সময় এমন নয়, তবে তলপেটে একটা অস্বস্তি থাকে অনেকের ক্ষেত্রে।
চিকিৎসাঃ এই অসুখের শিকার হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ তো করতেই হবে। তবে এই অসুখ ঠেকিয়ে রাখতে আমাদের কিছু অভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। এই ধরনের অসুখ ঠেকাতে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। সাধারণত, যেটুকু পানি আমাদের প্রয়োজন, প্রতি দিন সেটুকুও আমরা খেয়ে উঠতে পারি না। শরীরের বর্জ্য বা জীবাণু তাই বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগও পায় না।
এ ছাড়া সবুজ শাকসব্জি ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার ও ফল রাখুন ডায়েটে। ভিটামিন সি ক্ষতিকর ব্যাকটিরিয়া ধ্বংস করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে অন্য কোনও অসুখের জন্য আনারস খাওয়া বারণ না হলে আনারস রাখুন ডায়েটে। এর ব্রোমেলাইন মূত্রপথে সংক্রমণ রুখতে অত্যন্ত কার্যকর।
প্রতি বার প্রস্রাব করার পর প্রস্রাবের জায়গা পরিস্কার করে ধুয়ে নিন, শুধু তা-ই নয়, অপরিষ্কার অন্তর্বাস থেকেও নানা জীবাণু সংক্রমিত হয়। তাই এ সব ব্যবহারের সময়ও সতর্ক থাকুন।
রাস্তাঘাটে যে কোনও শৌচালয় বা দূরপাল্লার ট্রেনে ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকুন। গন্তব্যে গিয়েই পরিষ্কার করুন প্রস্রাবের জায়গা।
পিবিএ/এমআর