ইটভাটার তাপে ১শ’৫০ একর জমির ধান পুড়ে গেছে

পিবিএ,সৈয়দপুর (নীলফামারী): নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইটভাটার ধোয়ার তাপে প্রায় ১শ’ ৫০ একর জমির উঠতি ফসল চলতি ইরি-বোরো মৌসুমের ধানের ক্ষেত পুড়ে গেছে। ধান ক্ষেতগুলো লালচে হয়ে যাওয়াসহ ধানের শীষ চিটায় পরিণত হয়েছে। বিশাল এলাকাজুড়ে ধানের গাছ দেখা গেলেও সেগুলোতে নেই কোন শীষজুড়ে ধানের দানা। কোথাও কোথাও শীষসহ পুড়ো গাছই পুড়ে সাদা আকার ধারণ করেছে। ফলে ওই এলাকার কৃষকরা এবার সম্পূর্ণরূপে আবাদের ফসল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন।

জমির ধান পুড়ে গেছে
ইটভাটা

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কাঙ্গালুপাড়ার শতাধিক কৃষক জানান, অনেক টাকা খরচ করে তারা ধানের আবাদ করেছেন। ধানের মোচা আসার মাত্র কিছু দিনের মধ্যেই পার্শবর্তী এমজেডএইচ ব্রান্ডের ইটভাটার ধোয়ায় এলাকার সব ক্ষেতের ধান পুড়ে গেছে। এতে আমরা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। বিষয়টি সৈয়দপুর কৃষি বিভাগকে প্রায় এক সপ্তাহ আগে জানালেও কোন ভ্রুক্ষেপ করেনি তারা। বাধ্য হয়ে আমরা গত ৩দিন যাবত ইটভাটা এলাকায় আন্দোলন করছি।

অনেক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটা হওয়ার পর থেকে এখানে চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। তাই আমরা এখান থেকে ইটভাটা অপসারণ চাই। তাছাড়া এবার ধান ক্ষেতগুলোর মোচা আসার পরও ইটভাটায় আগুন দেয়ায় এতবড় ক্ষতি হলো। তারা বলেন, কামারপুকুর ইউনিয়নে প্রায় ২২টির মত ইটভাটা রয়েছে। প্রায়ই কোন না কোন ইটভাটার কারণে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তারপরও কৃষি বিভাগ এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ভাটা মালিকরা ফলনের মূহুর্তেও ইটভাটায় আগুন দিয়ে থাকে। যা বন্ধ করা প্রয়োজন। এভাবে বার বার ক্ষতিগ্রস্থ হলেও কোন ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় আমরা নিস্ব হওয়ার পথে। তাই ইটভাটাগুলো বন্ধ করার দাবি জানান তারা।

জমির ধান পুড়ে যাওয়ায় কৃষকের মাথায় হাত

এদিকে একটি সূত্র মতে, ইউনিয়ন পরিষদ কৃষি জমিতে ইটভাটা প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদ না করে ট্রেড লাইসেন্স দেয়ার মাধ্যমে অর্থ আয়ের জন্য কৃষকদের স্বার্থ জলাঞ্জলী দেয় বলেই একের পর এক ইটভাটা গড়ে উঠছে আর কৃষকরা টাকা খরচ করে আবাদ করেই ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হোমায়রা মন্ডলকে মুঠোফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি এবং একটি তদন্ত টিম গঠন করে বিষয়টি দেখার জন্য পাঠিয়েছি। তদন্ত টিম রিপোর্ট দিলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, মূলত: ইটভাটার ধোয়ার কারণেই ধানগুলো পুড়ে গিয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে।

মেসার্স জিকরুল হক ট্রেডার্স তথা ইটভাটা মালিক হারুন হক জানান, আমরা দীর্ঘ ২২ বছর যাবত এখানে ইটভাটা চালিয়ে আসছি। কোন দিন এমন ঘটনা ঘটেনি। ধানগুলো মূলত: চলমান অতিরিক্ত প্রাকৃতিক তাপমাত্রার কারণে পুড়ে গেছে বা অন্য কোন সমস্যা থাকতে পারে। ইটভাটার ধোয়ার কারণে হয়নি। তাছাড়া ভাটার পাশ্ববর্তী ক্ষেতে কিছুই হয়নি। দূরের ক্ষেতে কিভাবে তা হলো বিষয়টি কৃষি বিভাগের আরও খতিয়ে দেখা দরকার।

পিবিএ/জেডএইচ/আরআই

আরও পড়ুন...