পিবিএ ডেস্ক: ইতালীর একটি স্কুলবাসের ড্রাইভার ৫১ জন শিশু শিক্ষার্থী সহ বাসটি ছিনতাই করে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।তবে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে অল্পের জন্য রক্ষা পায় সব শিশু।পরে আগুনের বিস্ফোরণে স্কুল বাসটি সহ তিনটি গাড়ী ধ্বংস হয়। স্কুলবাসটিতে অবস্থানকারী কোন শিক্ষার্থী হতাহত হয়নি।খবর বিবিসর।
বাস চালক ইতালির নাগরিক হলেও সেনেগালের বংশোদ্ভুত।তাকে তাৎক্ষনাৎ আটক করেছে পুলিশ।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালির কঠোর অভিবাসন নীতি নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলো ওই চালক।সে সবাইকে শেষ করে দিবো বলে শিশুদের শাসাচ্ছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।এক পর্যায়ে সে পুরো বাসে পেট্টল ঢালতেও শুরু করে।এরই মধ্যে এক শিশু মোবাইলে তার বাবাকে ঘটনা জানালে তার বাবা তাৎক্ষণাৎ পুলিশকে জানালে পুলিশ দ্রুত
স্কুলবাসটি আটক করে এর পেছনের জানালার গ্লাস ভেঙ্গে দ্রুত শিশিদের উদ্ধার করে।
নিউ জিল্যান্ডে অভিবাসী মুসলিমরা বর্ণবাদী বিদ্বেষী হামলার শিকার হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে ইতালিতে অভিবাসী কর্তৃক এই বিদ্বেষী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হলো।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধত করে বিবিসি জানিয়েছে, ভাইলাতি দি ক্রেমার এক স্কুলের ২টি শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিয়ে একটা শারীরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যাওয়ার কথা ছিল ওই স্কুল বাসটির। তবে হঠাৎ করেই বাসটিকে ভিন্ন পথে নিয়ে প্রাদেশিক প্রধান সড়ক দিয়ে মিলানের লিনেট বিমান বন্দরের দিকে নিয়ে যেতে শুরু করে এর চালক।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও’র বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চালক বাসটি চালিয়ে অন্যান্য গাড়িতে প্রচণ্ড জোরের সঙ্গে ধাক্কা দিচ্ছিল।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে রয়টার্স জানিয়েছে, সে সময় ইতালির অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় ওই বাস চালককে।
উল্লেখ্য, ইতালির কট্টর ডানপন্থী সরকার অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের লিবিয়া উপকূল থেকে উদ্ধার করে আনা জাহাজগুলোকে সে দেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । এতে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের সাগর থেকে উদ্ধার করে আনা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। খবর অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট বাস চালক এই বিষয়ে উচ্চস্বরে অভিযোগ করছিল।
বিবিসি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, একটি ছুরি নিয়ে ওই চালক যখন শিক্ষার্থীদের শাসাচ্ছিল, তখনই তাদের একজন অভিভাবকের সঙ্গে সেলফোনে যোগাযোগ করতে সমর্থ হয়। পুলিশ ওই অভিভাবকের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। চালক শিক্ষার্থীরা বাসে থাকা অবস্থাতেই গোটা বাসে পেট্রোল ঢালতে থাকে। তবে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার আগেই পুলিশ জানালার কাঁচ ভেঙে সব শিশুকে উদ্ধার করে।
পুলিশের মুখপাত্র মার্কো পালমিরি জানিয়েছেন, বাসে থাকা শিশুদের কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদের কেউ কেউ সামান্য আহত হয়েছে। কেউ কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মার্কো পালমিরি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বাসচালক সিয়ের বয়স ৪৭ বছর এবং সে সেনেগালিজ বংশোদ্ভূত। সি চিৎকার করে বলছিল, ‘সমুদ্রে সংঘটিত মৃত্যুগুলো বন্ধ করো। আমি নির্বিচারে সবাইকে হত্যা করব।’
রয়টার্স-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিবিয়া উপকূলে স্বেচ্ছাসেবকরা সমুদ্রে ডুবে যাওয়া নৌযান থেকে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের উদ্ধার করত। তবে ইতালির সরকার লিবিয়া উপকূল থেকে সংশ্লিষ্টদের উদ্ধার করার কাজে নিয়োজিত থাকা উদ্ধারকারী জাহাজগুলোকে সে দেশের বন্দরে ভেড়ার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের একজন বার্তা সংস্থা আনসাকে জানিয়েছে, ইউরোপে অভিবাসী হতে চাওয়া আফ্রিকান ব্যক্তিদের সাগরে ডুবে মৃত্যুর হওয়ার ঘটনায় উপ-প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও সালভেনি এবং লুইগি ডি মায়োকে দায়ী করছিল ওই চালক। তাদের সঙ্গে থাকা একজন শিক্ষক জানিয়েছেন, চালক বাসটিকে বিমানবন্দরের রানওয়েতে নিয়ে যাওয়া হুমকি দিয়েছিল।
পিবিএ/এএইচ