পিবিএ, ইবি, কুষ্টিয়া: ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন থেকে ২২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার ভোররাত ৪ টার দিকে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে গ্রেফতার করে ইবি থানা ও কুষ্টিয়া পুলিশ। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ক্যাম্পাসে বুধবার থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়ি ছাড়া কোনো গাড়ি ছেড়ে আসবেনা ক্যাম্পাসে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের সামনে অনশনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত পাঁচ বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ অনশন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেয় ।
অনশনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লেও প্রশাসনের কেউ না আসায় দুপুর দুইটায় অনুষদের ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এসময় অফিসে অবস্থানরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকা পড়ে। রাত ৯টায় অবরুদ্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে উদ্ধার করতে আসেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মমতাজুল ইসলাম ও ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ। তারা ভবনের ভিতরে ঢুকলে তাদেরকেও অবরুদ্ধ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
পরে রাত বারো টার দিকে তাদেরবে উদ্ধার করতে আসেন সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও প্রক্টর (দায়িত্বপ্রাপ্ত) আনিছুর রহমান ও অধ্যাপক আহসানুল আম্বিয়া। এর আগে রাত ১০ টা থেকেই গেটের সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। তারা রাত ৪ টা পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হন। এরপর রাত সাড়ে চারটায় ভিতরে ঢুকে ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টাকে উদ্ধার করতে চাইলে ছাত্ররা বাধা প্রদান করে ও শ্লোগান দিতে থাকে।
এসময় পুলিশ গেটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং আটক কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে। এসময় কয়েক দফায় অভিযান চালিয়ে আন্দোলনস্থল থেকে ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা) মোস্তাফিজুর রহমা ন, মিরপুর সার্কেলের এএসপি ফারজানা ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বুধবার সকাল ১০ টা থেকে আটককৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও দাবী আদায়ের লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ বিভাগের শিক্ষার্থী সহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ জানান, গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীরা পুলিশি হেফাজতে আছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রক্টর আনিছুর রহমান বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আলোচনা চলছে।
পিবিএ/এএন/আরআই