নাজমুল হুসাইন,ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নবীন এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। এতে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা সহ পাঁচ অভিযুক্তকে স্থায়ীভাবে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকাল পাঁচটায় (২১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আজ ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে এর আগে এ ঘটনায় গত ১৫ জুলাই নির্যাতনকারী পাঁচ অভিযুক্তকে ১ বছরের জন্য স্থায়ী বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি ও হাইকোর্টের গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-২ ধারা-৮ মোতাবেক ১২ মাসের জন্য তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি। এ শাস্তি চলাকালীন তারা ক্লাস-পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
তবে বিষয়টি পূনরায় আদালতের দৃষ্টিতে আনেন রিটাকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসিন। তিনি আদালতকে জানান যে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি প্রাসঙ্গিক পদ্ধতি লঙ্ঘন করে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রায় বাতিল করে হাইকোর্ট। এছাড়া নির্যাতনকারী পাঁচ শিক্ষার্থীর সাজা পুনঃনির্ধারনে উপাচার্যকে নির্দেশও দেয়া হয়। গত ২৬ জুলাই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন এবং ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত আদালতে জমা দিতে আদেশ দেওয়া হয়। তারই প্রেক্ষিতে আজ এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এর আগে গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গনরুমে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী ও পরিসংখ্যান বিভাগের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে হল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উচ্চ আদালত এবং শাখা ছাত্রলীগ কতৃক পৃথক চারটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনের আলোকে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই পাঁচ অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগ তাদের তদন্তের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বহিষ্কার করে।