পিবিএ,ইবি: বেশ কয়েকদিনের লাগাতার বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ট হয়ে মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার রাত পৌনে ১১টা থেকে ঘন্টা ব্যাপী সেখানে অবস্থান নিয়ে বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এর কিছু সময় পূর্বে উপাচার্য ঢাকা থেকে বাসভবনে ফিরে বিশ্রাম নিচ্ছেলেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার এক ব্যক্তিগত সহকারী।
একপর্যায়ে সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক নাছিরুদ্দীন আজহারী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে আন্দোলনের ভিডিও করার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা তাকে আন্দোলন স্থান ত্যাগ করতে বলে এবং ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকে। তবে সহকারী প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক নাছিরুদ্দীন আজহারী ভিডিও ধারন করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
পরে সেখানে উপস্থিত হন প্রাধ্যাক্ষ পরিষদের সভাপতি ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক আকরাম হোসাইন মজুমদার, মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাকারিয়া রহমান, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ত ম লোকমান হাকিম, শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক কে এম শরফুদ্দীন এবং সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। পরে তারা বিভিন্নভাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আশ্বস্থ করলে এবং তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সমার্থ হলে শাক্ষার্থীরা হলে ফিরে যায়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেল থেকেই বিশ্বিবিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ ছিল না। পরে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হলেও সাদ্দাম হোসেন হল ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল অন্ধকারাচ্ছন্ন থেকে যায়। এদুটি হলে একমাসেরও অধিক সময় ধরে জেনারেটর সংযোগ বিচ্ছিন্ন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
পরে রাত ৭টার দিকে তারা বিষয়টি প্রকৌশল দপ্তরে জানানোর পরেও বিদ্যুৎ না আসায় রাত পৌনে ১১টার দিকে জিয়া হল মোড় এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের টিএসসিসি, ডায়না চত্ত্বর, প্রশাসন ভবন প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারীর বাস ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা । এরপর বিদ্যুৎ বিভ্রাটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদিমূলক শ্লোগান দিতে থাকে তারা। পরে শিক্ষকদের আশ্বানে তারা হলে ফিরে।
এসময় আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা জানায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্যাম্পাসে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। হলে জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকলেও তাও ঠিকমত কাজ করে না এ দুই হলে। ফলে প্রায়শ পুরো হল অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এর ফলে গরমে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুতের হঠাৎ যাওয়া আসায় ল্যাপটপ ও ডেক্সটপের মত মূল্যবান ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
প্রাধ্যাক্ষ পরিষদের সভাপতি ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আকরাম হোসেন মজুমদার বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা খুব দ্রুত সমাধানের জন্য আশ্বস্থ করেছি। একই সাথে শনিবার সকাল ৯টায় তাদের সকল সমস্যা লিখিত আকারে নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে আসতে বলছি। জেনারেটর সমস্যার কথা জানা ছিল না। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রকৌশল দপ্তরে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আলিমুজ্জামান টুটুলের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি পিবিএকে বলেন, আমরা যেখান থেকে বিদ্যুৎ নেই ওই ফিডারে আগুন লেগেছিল। যে কারণে সাময়িক এই গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন ওই ফিডারে রিপ্লেসমেন্টের কাজ চলছে। আশাকরি খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।
হলে জেনারেটর ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, জেনারেটর লোড টানতে পারছে না। অত্যাধিক চাপ পড়ার কারণে বার বার সুইচ পড়ে যাচ্ছে। ফলে হয় লোড বাড়াতে হবে, নয়তো রুমে রুমে নেয়া লাইনগুলো খুলে দিতে হবে। তাহলেই একটানা পাওয়ার সাপ্লাই দিতে পারবে।
পিবিএ/এফএস