পিবিএ ডেস্ক: শুক্রবার ভোরে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে এক ড্রোন হামলায় হত্যার ২৪ ঘণ্টা পর ইরাকে ফের বিমান হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরাকের ইরান সমর্থিত সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠী পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিটের একটি (পিএমইউ) ঘাঁটিতে এ হামলায় গোষ্ঠীটির আরও এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন।
সামরিক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শুক্রবার শেষ রাতে অর্থাৎ শনিবার ভোরে রাজধানী বাগদাদের উত্তরের তাজি এলাকায় আল শাবির একটি ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র ফের বিমান হামলা করলে গোষ্ঠীটির এক শীর্ষ কমান্ডারসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।
গতকাল ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় শুধু খামেনির পর ইরানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে পরিচিত কাসেম সোলেইমানি নিহত হননি। সোলেইমানির সঙ্গে পিএমইউ বা হাশেদ আল-শাবির উপপ্রধান আবু মাহদি আল মুহান্দিস নিহত হন। এছাড়া তিনি সোলেইমানির উপদেষ্টা ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুও ছিলেন।
তবে পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিট অর্থাৎ আরবিতে হাশেদ আল-শাবি অবশ্য এই হামলায় তাদের শীর্ষ কমান্ডার নিহত হওয়ার খবর অস্বীকার করেছে। এক পুলিশ রয়টার্সকে বলেন, পিএমইউ-এর গাড়িবহর লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হলে অনেকে হতাহত হয়েছেন। তবে কতজন নিহত হয়েছেন তা বলতে পারেননি তিনি।
সোলেইমানি হত্যার পর তেহরান যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয়ার পর ফের এই হামলা হলো। গতকাল মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের অভিজাত বাহিনী আইআরজিসির কুদস ফোর্সের (বিদেশি শাখা) কমান্ডার সোলেইমানি নিহত হন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির পর তার ক্ষমতাই ছিল সবচেয়ে বেশি।
গত এক সপ্তাহ ধরে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। গত ২৭ ডিসেম্বর পিএমইউ-এর শাখা কাতায়েব হিজবুল্লাহ’র এক রকেট হামলায় মার্কিন এক ঠিকাদার নিহত হন। তার দুদিন পর যুক্তরাষ্ট্র পিএমইউ-এর ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ২৫ জনকে হত্যা করে।
এর প্রতিবাদে গত সোমবার পিএমইউ-এর সদস্যরা মিছিল নিয়ে রাজধানী বাগদাদের গ্রিন জোনে অবস্থিত মার্কিন দূতবাসে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের আরও ৭৫০ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয়। এরপর শুক্রবার ভোরে সোলেইমানি ও পিএমইউ-এর উপপ্রধানসহ আটজনকে হত্যা করে।
গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ক্ষমতার বলয় তৈরির কারিগর ছিলেন মেজর জেনারেল সোলেইমানি। তাকে হত্যার পরপরই তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে আয়াতুল্লাহ খামেনি কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দেন। তার জের শেষ না হতেই ইরাকে ইরান সমর্থিত ওই মিলিশিয়া ঘাঁটিতে ফের হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র। যাতে উত্তেজনা আরও বাড়বে।
পিবিএ/এমআর