পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে দেশটির রাজধানীতে বিক্ষোভের ঘটনায় তিন দিনে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ইসলামাবাদ পুলিশ। গতকাল বুধবার ইসলামাবাদ পুলিশ এই তথ্য জানায়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বিক্ষোভকারীরা রাজধানীতে প্রবেশ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেআইনি ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, ইমরান খান ও পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দলের উচিত, অবিলম্বে একটি রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করা।
ইমরান খানের ডাকে বিক্ষোভ করতে তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা-কর্মীরা ইসলামাবাদের ডি-চকে পৌঁছে গিয়েছিলেন। নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গতকাল ভোরে অভিযান চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়।
ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা আছে। কয়েকটি মামলায় তাঁকে দণ্ডও দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তিনি গত ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। এই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করেছেন তিনি।
নির্বাচনের পর থেকে পিটিআই সরকারি দমন–পীড়ন উপেক্ষা করে নিয়মিত সভা-সমাবেশ করছে। নির্বাচনের পর রাজধানীতে পিটিআইয়ের গত মঙ্গলবারের সমাবেশটি ছিল সবচেয়ে বড়।
পিটিআইয়ের ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ইসলামাবাদে প্রবেশ করেছিলেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা নানা বাধাবিপত্তি ও সমাবেশ করার ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেছিলেন। বিক্ষোভ ঠেকাতে ইসলামাবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ইসলামাবাদ পুলিশের মহাপরিদর্শক আলী নাসির রিজভী বলেন, গত রোববার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে ৯৫৪ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গতকাল ভোরে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সংঘর্ষে পুলিশের এক কর্মকর্তা ও আধা সামরিক বাহিনীর চার সদস্য নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাহসিকতার সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলা করেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক ধরপাকড় ও অভিযানের মুখে বিক্ষোভ থেকে শেষ পর্যন্ত পিছু হটে পিটিআই। গতকাল ভোরে দলটি বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।