উত্তম কুমার,বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক

পিবিএ,ডেস্ক: উত্তম কুমার বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক।তিনি কিংবদন্তি তিনি মহানায়ক বলেই পরিচিত। ১৯৮০ সালের এ দিনে কলকাতায় মারা যান উত্তম কুমার। মৃত্যুর পরেও তিনি ভক্তদের হৃদয়ে যুগ যুগ ধরে নিজের আসনটি দখল করে বসে আছেন।

১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় তার জন্ম। পরিবারের দেওয়া নাম ছিল অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়। বাবা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় আর মা চপলা দেবী গৃহিণী। অভাব-অনটনের সংসার; কোনওমতে দিন কেটে যায়।

সংসারে অভাবের কারণে পড়াশোনা শেষ না করেই কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টে ক্লার্কের কাজে যোগ দিতে হয়েছিল উত্তম কুমারকে। তখনই আহিরীটোলায় নিজেদের থিয়েটার গ্রুপ ‘সুহৃদ সমাজ’-এ নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন তিনি।

থিয়েটারে কাজের সময় চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু ‘ফ্লপ মাস্টার’র তকমা জুটে কপালে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত একের পর এক সিনেমা করলেও সবই ফ্লপ হয়। ১৯৫৩-তে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ছবির মাধ্যমে তুমুল সাড়া ফেলেন তিনি।

উত্তম কুমারকে ভেবেই ‘নায়ক’ ছবি করার কথা ভেবেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ‘নায়ক’ উত্তমের ক্যারিয়ারের ১১০তম ছবি। এই ছবিটি আজো সিনেমাপ্রেমীদের মনে এক অন্যরকম আলোড়ন তৈরি করে।

সত্যজিৎ রায়ের দারুণ গল্প বলার ঢং দর্শকদের আজো মুগ্ধ করে। অন্যদিকে ‘নায়ক’-এ উত্তম কুমারের ক্যারিয়ারে এক ভিন্নমাত্রা যোগ করে। হলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী এলিজাবেথ টেলর ‘নায়ক’ দেখার পর রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। উত্তমের সঙ্গে দেখা করতেও চেয়েছিলেন তিনি। এলিজাবেথ আসলে মুগ্ধ হয়েছিলেন উত্তম কুমারের অভিনয়ে।

তিনি একাধারে একজন ভারতীয়-বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা, চিত্রপ্রযোজক এবং পরিচালক। উত্তম কুমারের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল ‘দৃষ্টিদান’। বসু পরিবার চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর প্রথমবারের মতো সুচিত্রা সেনের বিপরীতে সাড়ে চুয়াত্তর মুক্তি পাবার পরে তিনি চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন লাভ করেন।

এই সিনেমার মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়। এরপর তারা একসাথে হারানো সুর, পথে হল দেরী, সপ্তপদী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা এবং সাগরিকা চলচ্চিত্রসহ বেশ কিছু ব্যবসায়িকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

বাংলা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন উত্তমকুমার। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সফলভাবে মঞ্চেও অভিনয় করেছেন এই মহানায়ক।

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...