পিবিএ,ঢাকা: নানা জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে রাজধানীর হাতিরঝিল ছাড়ছে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। আগামী ৩ এপ্রিল উত্তরায় দুই টাওয়ারসমৃদ্ধ বহুতল ভবনে যাচ্ছে সংগঠনটির নতুন অফিস। উত্তরার তৃতীয় পর্বের ১৭ নম্বর সেক্টরে (দিয়াবাড়ি এলাকায়) নির্মাণাধীন নতুন ভবনটির ইতিমধ্যে চারটি ফ্লোর তৈরি হলেও আপাতত ব্যবহারের জন্য দুটি ফ্লোর প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে গ্যাস, পানি, বিদ্যুত্, যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় পরিষেবার কাজও দ্রুতলয়ে এগিয়ে চলছে। বিষয়টি বৃহস্প্রতিবার দুপুরে পিবিএ’কে নিশ্চিত করেছেন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।
উত্তরার নতুন ভবনের চারতলার কাজ শেষ হয়েছে। আমরা আমাদের কাজ সেখানে চালিয়ে নিতে পারবো। তবে ভবনে চলাচল উপযোগী সড়ক নির্মাণের কাজ এখনও চলছে।
তিনি পিবিএ’কে বলেন, দুই টাওয়ার সমৃদ্ধ বিজিএমইএ এর নতুন বহুতল ভবনটি উত্তরার ১৭ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত। ১৩ তলা কমপ্লেক্সটির ৬ষ্ঠ তলায় এখন চলছে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ। ৪ লাখ ৬৪ হাজার বর্গফুটের কমপ্লেক্সটিতে থাকছে দুটি বেইজমেন্ট। এর ওপর ১৩ তলার দুটি টাওয়ারের মাঝখানে থাকবে ৫ তলা টাওয়ার। নির্মাণের শেষ পর্যায়ে এসে দিন-রাত কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিলের মধ্যে হাতিরঝিলের ভবনটি খালি করে দেওয়া হবে এই মর্মে আদালতের কাছে দেওয়া মুচলেকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেই আমরা অসম্পূর্ণ ভবনেও কার্যালয় স্থানান্তর করছি।
তিনি বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে ৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিএমইএর ভবনটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। ওইদিন সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ উদ্বোধন করবেন।
বিজিএমইএ সূত্র জানিয়েছে, একই কাঠামোর উপরে ১৩তলা দুটি টাওয়ার তৈরি হচ্ছে। পুরো ভবনটি তৈরি হওয়ার পর বড় আকারের অডিটরিয়াম, এক্সিবিশন সেন্টার, শোরুমসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকবে। ভবনটিতে তিন দিক থেকে যাতায়াতের সুুবিধা থাকবে। উত্তরার মাসকট প্লাজা রোড ছাড়াও উত্তরা জসিম উদ্দিন রোড এবং মিরপুরের ডিওএইচএস দিয়ে হবে আরো দুটি রাস্তা। ভবনের আয়তন হবে চার লাখ ৬৪ হাজার বর্গফুট।
উত্তরায় ভবনের জন্য সরকারের সহযোগিতায় সাড়ে পাঁচ বিঘা জমি নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেকে ক্রয় করা হয়।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট ওই ভবনটি অবৈধ হিসেবে রায় দিয়ে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেয়। দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বিজিএমইএ। শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগ ওই আবেদন খারিজ করে রায় দেয়। এরপর একাধিকবার সময় বাড়িয়ে সর্বশেষ ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভবনটি স্থানান্তরের বিষয়ে মুচলেকা দেওয়া হয় বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে।
অবশ্য বিজিএমইএ চলে যাওয়ার পর ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে কিনা, তা এখনো ঠিক হয়নি। যদিও আদালতের রায়ে ভবনটি বিজিএমইএ’র খরচেই ভেঙে ফেলার কথা বলা হয়েছে। ভবন ছাড়ার পর এ দায়িত্ব পালন করার কথা রাজউকের ।
পিবিএ/জেআই/হক