উত্তম কুমার হাওলাদার,কলাপাড়া (পটুয়াখালী): আকাশে মেঘ থাকলেও প্রচন্ড রোদ রয়েছে, এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। বাতাসের চাপও নেই তেমন। পূর্ণিমার জো’য়ের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন সাগার বেশ উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ তীরে আছড়ে পড়ছে। স্বাভাবিক জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে নির্দিষ্ট স্থান অতিক্রম করায় দুর্ভোগে পড়েছে সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে সমুদ্র গোসলে নামতে নিষেধ থাকলেও তা মানছেনা আগত পর্যটকরা। ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছেন তারা। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার মাইকিং করতেও দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, তিন দিন ধরে সমুদ্রের ঢেউয়ে তান্ডবে সৈকত সুরক্ষা জিও ব্যাগ ও জিও টিউবের ক্ষতি হয়েছে। জিরো পয়েন্টের আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় প্রবল জোয়ারে তেড়ে আসা উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে দিনভর মিতালি করেছেন পর্যটকরা। শিশু কিশোর যুবকরা মেতেছেন আনন্দ উল্লাসে। সকাল থেকে বেলা যত বাড়ছে তত বাড়ছে পর্যটকের ভিড়। শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকত যেন পর্যটকে মুখরিত হয়ে ওঠে। একই সাথে এসব পর্যটক সৈকতের বালিয়াড়িতে হৈ-হুল্লোড় করছে। কেউ কেউ সমুদ্র দর্শনের পাশাপাশি রাখাইন পল্লী, রাখাইন মার্কেট, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ মন্দির, ঝাউবাগান, গঙ্গামতির লেক, লাল কাকড়ার চর, লেম্বুর বন, আন্ধার মানিক নদী মোহনা, ফাতরার বন সহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তবে বাড়তি পর্যটকদের আগমনে খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যাসায়িরা।
সৈকতের ছাতা বেঞ্চ ব্যবসায়ী নুর হোসেন বলেন, সাগরের পানি অনেক বেড়েছে। যার কারণে জোয়ারের সময় ছাতা বেঞ্চ সরানো হয়েছে। এ সময় ডাব,আইসক্রিম ও আচার বিক্রেতাসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিক্রি বন্ধ রাখতে হয়।
পর্যটক আরিফ হাসান বলেন, সমুদ্রের সৌন্দর্য তখনই ভালো লাগে, যখন বড় বড় ঢেউ কিনারায় আছড়ে পড়ে। কিন্তু ঢেউ দেখে লোভ সামলাতে না পেরে গোসল করতে নেমেছি। বেশ আনন্দে মেতে ছিলাম।
পর্যটক মাহামুদ বলেন, ছুটি থাকায় কুয়াকাটা ঘুরতে এসেছি। তবে যে ঢেউ আশা করিনি, তার চেয়ে ও বড় বড় ঢেউ দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, সাপ্তাহিক ছুটিসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বেশি হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন বলেন, পূর্ণিমার জো’য়ের প্রভাবে সমুদ্র কিছুটা উত্তাল রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশ টিম টহলে রয়েছে। এছাড়া মাইকিং করে পর্যটকদের সচেতন করা হচ্ছে।
এদিকে পূর্নিমার জো’য়ের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে আন্ধারমানিক, রাবনাবাদ সহ সকল নদ-নদীর পানি। তাই গত তিনদিন ধরে দু’দফা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নিন্মাঞ্চল। বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় ভোগান্তিতে পড়েছে বেড়িবাঁধের বাইরের বসবাসকারীরা এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়া।