পিবিএ ঢাকা: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘বিএনপির আমলে ১০টি হোন্ডা, ২০ জন গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা, এমন অবস্থা এখন আর নেই। সময়ের পরিবর্তনে এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। ইভিএম পদ্ধতিতে পোলিং এজেন্ট না থাকলেও চলে। কারণ ইভিএম নিজেই পাহারাদার। আঙুলের ছাপ না দেয়া পর্যন্ত ভোট হবে না।’
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) সরকার ছাড়া যেকোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে অভিযোগ করা বিএনপির পুরানো রেকর্ড। দিনের শুরুতেই বিএনপির দক্ষিণের মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন যে অভিযোগ করেছেন, এটা একেবারে ডাহা মিথ্যাচার করেছেন। উনি বলেছেন, তাদের এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। অথচ একই দলের নেতা মির্জা আব্বাস ভোট দিয়ে এসে বলেছেন, তার কেন্দ্রে তিনি বিএনপির পোলিং এজেন্টকে দেখতে পেয়েছেন। সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে সব জায়গায় তারা এজেন্ট দিতে পারেননি। তাই উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর জন্য তারা একটা পায়তারা করছে। তাদের এ ধরনের অভিযোগ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএম একটা ডিজিটাল পদ্ধতি। এটা এমন একটা পদ্ধতি যেখানে ভোট চুরি করার কোনো সুযোগ নেই। ইভিএম নিজেই পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন করে থাকে। আঙুলের ছাপ না দেয়া পর্যন্ত ইভিএমে ভোট গ্রহণযোগ্য হবে না। সে কারণে ইভিএম অত্যন্ত নিরাপদ একটি পদ্ধতি।’
ভোটার সংখ্যা কম কেন? জবাবে নানক বলেন, ‘শীতের সকাল সেকারণেই ভোটাররা একটু দেরিতে আসছে। তবে পুরুষদের চাইতে মহিলা ভোটারদের সংখ্যা অনেক বেশি। সময় যতই বাড়ছে, ভোটারদের পরিমাণ কেন্দ্রে ততোই বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে নানক বলেন, ‘কূটনৈতিক মিশনের একটা স্বাভাবিক শিষ্টাচার রয়েছে। এটা আমাদের ব্যর্থতা নয়। আমরা বারবার তাদের বলেছি, নির্বাচনের বিষয়টি আমাদের একেবারেই আভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ করা নিয়ম, আইন এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত। তাদের এ ধরনের আচরণ মেনে নেয়া যায় না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে, পৃথিবীর কারো কাছে মাথা নত করতে রাজি না। কূটনীতিকদের শিষ্টাচারবহির্ভূত কারণে প্রধানমন্ত্রীও সকালে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’
নানক আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঢাকাবাসীকে ভোট দেয়ার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপ মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুত স্বপন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, প্রাণিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকার দুই সিটিতে (উত্তর ও দক্ষিণ) শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ইভিএমের মাধ্যমে এ ভোটগ্রহণ চলছে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ব্যবহার হচ্ছে ২৮ হাজার ৮৭৮টি ইভিএম। তবে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি কম বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
পিবিএ/এমআর