উন্নয়ন মানেই কি মগবাজার ফ্লাইওভার: মান্না

পিবিএ,ঢাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা রিকশা-ভ্যান চালাচ্ছেন জানিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘শিক্ষার চূড়ান্ত অপমান এ রকম করে হচ্ছে। তারা (সরকার) বসে বসে ডুগডুগি বাজায়! আমরা তো উন্নয়নের মহাসড়কেই উঠে গেছি। উন্নয়ন মানেই কি মগবাজার ফ্লাইওভার?’

শনিবার (১৯ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এ কথা জানান তিনি। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট এই মানববন্ধনের আয়োজন করেছে।

মান্না বলেন, ‘পত্রিকায় পড়েছি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কিন্ডারগার্টেনও বন্ধ; কিন্ডারগার্টেন মানে একটি বিশেষ মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর একজন প্রিন্সিপাল নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ার-টেবিল বিক্রি করে ভাড়া পরিশোধ করেছেন, এরপর গ্রামে গেছেন। গ্রামের বাজারে চা বিক্রি করছেন। লজ্জা করে না এই শিক্ষামন্ত্রীর? লজ্জা করে না এই প্রধানমন্ত্রীর?’

তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা… এমন কী ভ্যানগাড়ি চালায়, রিকশা চালায়- শিক্ষিত মানুষ যারা চাকরি হারিয়েছেন যাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ। গ্রাম-গ্রামান্তরে অনেক মানুষ এমন। বাংলাদেশে শিক্ষার চূড়ান্ত অপমান এ রকম করে হচ্ছে। তারা (সরকার) বসে বসে ডুগডুগি বাজায়! আমরা তো উন্নয়নের মহাসড়কেই উঠে গেছি। উন্নয়ন মানেই কি মগবাজার ফ্লাইওভার?’

‘মুরুব্বি, গার্ডিয়ান পিতা-মাতা তাদের অনেকে ফেসবুকে লিখেছে- কচি কিশোর কেবল যৌবনে পা দিয়েছে তারা অনলাইন ক্লাসের নামে, অনলাইন কাজের নামে ইন্টারনেটে ঢুকে আজ সমস্ত অশ্লীলতার মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। আমরা কি প্রজন্ম তৈরি করছি!’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, ‘যারা এতদিন ধরে বললেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল করেছি এগুলো সবই ফোর-টুয়েন্টি কথাবার্তা ছিল। তার প্রমাণ- অনলাইন পরীক্ষায় কোনো গার্ড নেই। কোনো পরিদর্শক নেই। যিনি পরীক্ষা দিচ্ছেন উনি বই খুলে দেখে দেখে লিখছেন, তাকে চেক দেয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা বহুবার বলেছি- এই সরকার দেশের ভোট নষ্ট করেছে।’

বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে দেড়শ-দুইশ পর্যন্ত মামলা আছে জানিয়ে মান্না বলেন, ‘পরিশ্রম করে করে মামলা দিয়েছে না? তাদের অবশ্য মামলা দেয়ার জন্য বুদ্ধি খাটানোর দরকার লাগে না। আমাকে যখন গ্রেফতার করল। ইন্টারোগেশন করে, জিজ্ঞেস করে খালি উল্টাপাল্টা কথা। আমি বললাম ভাই, যা জানতে চান সেটা বলেন। বলে মামলাতো সাজাতে হবে কিছু পয়েন্ট দেন। আমি বললাম- আমি যদি পয়েন্ট দেই তবে আপনারা কি মামলা সাজাবেন?’

মান্না বলেন, ‘তাদের যে প্রধান প্রশ্নকর্তা তিনি আমাকে একদিন বললেন, আপনাকে আমরা একটা মামলা দিয়েছি সেটা বিদ্রোহের, কিন্তু সেনাবাহিনীর কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন সেটা বের করতে পারিনি। আরও কঠিন একটা মামলা দেয়ার চেষ্টা করবো। পুলিশ জলজ্যান্ত মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে।’

‘আমি পুলিশের দোষ দেই না। পুলিশের সরদার তারে যদি বলে মিথ্যা কথা না লিখলে চাকরি থাকবে না, তো সে কি করবে?’

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্মীয় একজন বক্তা আছেন না ত্ব-হা (আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান)। তাকে অনেক দিন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তারপর এখন কোথায় পেলেন?’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)–এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমরা জানি একটি রাষ্ট্রকে যদি ধ্বংস করতে হয়, তবে তার শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশের পথ রুদ্ধ করতে হবে। তাহলে আর সেই জাতি সামনে এগোতে পারবে না। মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। আমি মনে করি আজকে যে কাজটা হচ্ছে সেটা আত্মঘাতী।’

‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ।’

মানববন্ধনে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

পিবিএ/জেডএইচ

আরও পড়ুন...