বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে আ’লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা

বিএনপির সংসদ সদস্যরা ছেড়ে দেওয়ায় শূন্য হওয়া আসনগুলোর উপনির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুটি আসন ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদকে ছেড়ে দিয়েছে। তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। একটি আসনে কোনো প্রার্থী দেওয়া হয়নি। উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

আজ রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে গণভবনের ফটকে সাংবাদিকদের এসব বিষয়ে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ১৪-দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এই আসনে ওয়ার্কার্স পার্টি তাদের প্রার্থী ঠিক করবে। এ আসনে ২০১৪ সালে ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী একবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।

বগুড়া-৪ আসনটি আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়েছে জোটের আরেক শরিক জাসদকে। এই আসনে জাসদের রেজাউল করিম তানসেন আগেও সংসদ সদস্য ছিলেন। এবারও তাঁকে প্রার্থী মনোনীত করেছে জাসদ।

বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে দলটির নেতা রাগেবুল আহসানকে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ নিজস্ব প্রার্থী দিয়েছে। তাঁরা হলেন যথাক্রমে মু. জিয়াউর রহমান ও মো. আবদুল ওদুদ। তাঁরা দুজনই ২০১৮ সালের নির্বাচনে নিজ নিজ আসনে ভোট করে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আওয়ামী লীগ নিজেদের প্রার্থী দেয়নি। জোটের কোনো শরিককেও এই আসন ছাড়েনি দলটি। এই আসন থেকে ২০১৮ সালে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপির আবদুস সাত্তার ভুইয়া। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. মঈনউদ্দিন মঈন। ওই নির্বাচনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি। ২০০৮ ও ২০১৪ সালেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। দুবারই সংসদ সদস্য হয়েছিলেন জিয়াউল হক মৃধা।

এদিকে আবদুস সাত্তার ভুইয়া গত বৃহস্পতিবার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনিই আওয়ামী লীগের সমর্থন পেতে পারেন বলে এলাকায় আলোচনা চলছিল। উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে রোববার তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

সরকার ও আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, আবদুস সাত্তারের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ভোটে আনতে পারলে বিএনপির সংসদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা।

বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্য গত ১০ ডিসেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পরে তাঁরা জাতীয় সংসদে গিয়ে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর মধ্যে একটি সংরক্ষিত নারী আসন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ছয়টি আসনে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

আরও পড়ুন...