
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে তাঁরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দুর্বার বাংলা’ ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে।
মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা—‘দফা এক, দাবি এক, কুয়েট ভিসির পদত্যাগ’; ‘কুয়েট ভিসির গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’; ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’; ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’; ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়; ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’; ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, মানি না, মানব না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিসংবলিত পোস্টার সাঁটান।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন ঘোষণাপত্রটি পড়ে শোনান। ঘোষণাপত্রটি পাঠ করার পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হলের তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করার ঘোষণা দেন। এরপর বেলা আড়াইটা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে ফেলেন। এ সময় ১০০ থেকে ১৫০ শিক্ষার্থী হলগুলোতে অবস্থান নেন।
এর আগে সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। তবে গতকাল কুয়েটের দাপ্তরিক কর্যক্রম শুরু হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে। গত সোমবার রাতেও শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবনের সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করেন। সর্বশেষ গতকাল দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন এবং তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন।