পিবিএ,কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক যুবককে ব্রহ্মপুত্র নদের নির্জন চরে নিয়ে যাওয়ার সময় একদল দুর্বৃত্তকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা । এসময় ওই যুবক জীবন বাঁচাতে মোটর সাইকেল থেকে লাফ দিয়ে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় জনতা দুর্বৃত্তদের আটক করে ৯৯৯ এ ফোন করে। অভিযোগ উঠেছে দুর্বুত্তরা ওই যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণের দাবীতে ব্যর্থ হয়ে হত্যার উদ্দ্যেশে নিয়ে যাচ্ছিল। ঘটনাটি ঘটেছে, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের পালের ভিটা নামক স্থানে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বুধবার দুপুরে আটককৃতদেরকে জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে সুলতানা ওরফে ইসমোতারা বেগমের (২৩) সাথে ঢাকায় গার্মেন্সে চাকুরি করার সুবাদে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার সরাই হাজিপুর গ্রামের আফছার আলীর পুত্র রাকিবুল ইসলামের (২৫) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই এক পর্যায়ে তারা উভয়ের সম্মতিতে গত ৩ বছর আগে বিয়ে করেন। স্ত্রী ইসমোতারা বাবার বাড়িতে থাকায় গত সোমবার রাকিবুল শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসেন। মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা ইসমোতারার বাড়িতে এসে তাদের বিয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। এরই এক পর্যায়ে রাকিবুল কে নিরাপদে রাখার কথা বলে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে রাকিবুলকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ফাঁকা স্টাম্পে সই করা সহ মুক্তিপণের টাকা দাবী করে। পরে ব্যর্থ হয়ে ওই দিন গভীর রাতে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রহ্মপুত্র নদে নিয়ে যায়। এসময় তার আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় পালের ভিটা নামক স্থানে দুর্বৃত্তদেরকে আটক করে ৯৯৯ এ ফোন দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের ছনসল ইসলামের পুত্র চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য এরশাদুল হক (৪৪) একই ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র মাহাবুর (৩২), আব্দুল লতিফের পুত্র রাশেদুল ইসলাম (৩০) ওমর আলীর পুত্র আব্দুর মান্নার (৩৫) কে আটক থানায় নিয়ে আসে। এসময় মাদারটারী গ্রামের আব্দুর রহিম (সাধু) মিয়ার পুত্র পলাশ মিয়া (২৮) পালিয়ে যায়।
রাকিবুলের স্ত্রী ইসমোতারার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এরশাদুল আর্মি আমার বাড়িতে এসে আমাদের বিয়ের ব্যাপারে জানতে চায়। আমরা তিন বছর আগে বিয়ে করেছি বললেও তারা বিশ্বাস করতে চায়না। পরে তারা আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশ্যে ব্রহ্মপুত্র নদে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে রাকিবুলের পিতা আফছার আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুর থেকে আমার ছেলের মোবাইল ফোন দিয়ে একজন কল করে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। টাকা দিতে অপরাগতা জানালে পরবর্তীতে আমার ছেলেকে মারধর করা অবস্থায় ফোন দিয়ে ছেলের কান্নাকাটি শোনায়। পরে বিষয়টি রায়গঞ্জ থানায় অবগত করি।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের জেল-হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পিবিএ/মইনুল ইসলাম বাবু/এএম