
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আইন, নীতিমালা ও সংবিধানে যা আছে সেটা মেনে চললে জনগণের সেবা আর কল্যাণ করা ছাড়া জেলা প্রশাসনকরে আর কোনো কাজ নেই। তিনি বলেন, “সুতরাং আমাদের একটাই কথা- আইন অনুযায়ী চলেন।”
বিগত সরকার প্রশাসনকে জনগণের ‘প্রতিপক্ষ হিসেবে ব্যবহার করেছে’ বলেও অভিযোগ করেছেন আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের কার্য অধিবেশনের পরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন আইন উপদেষ্টা।
জনগণকে সেবা দিতে আপনারা জেলা প্রশাসকদের কী ফর্মুলা দিয়েছেন প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেছেন, জনগণের সেবা ও কল্যাণ করা ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই।
“এখানে ফর্মুলার ব্যাপার নাই। আইনে যা আছে নীতিমালায় যা আছে সেটা মেনে চললে জনগণের সেবা আর কল্যাণ দেওয়া ছাড়া উনাদের আর কোন কাজই নাই। সুতরাং আমাদের শুধু একটা কথাই যে আপনি আইন অনুযায়ী চলেন, আপনি আপনার বিবেক মত চলেন। তাদের যে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন।”
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আজকের ডিসিশন আমার জন্য একটা নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। আমার কাছে মনে হয় এটা খুব জরুরি ছিল। ওনারা মাঠ পর্যায়ে প্রশাসন দেখেন, বাস্তবায়নে কি কি সমস্যা আছে ওনাদের থেকে কেউ ভালো জানেন না।”
“আমাদেরকে বললেন যারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তাদেরকে যখন ধরা হয় তখন দেখা যাচ্ছে তাড়াতাড়ি জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। এটা ওনাদের কনসার্ন। অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব বললেন, আদালতের কাজই তো হচ্ছে উপযুক্ত ক্ষেত্রে জামিন দেওয়া। এই ধরনের কিছু সমন্বয়ের ব্যাপার আসছে।”
মামলার ক্ষেত্রে সলিসিটর যে উইং আছে তারা আরও ভালোভাবে সমন্বয়ের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সেটা জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
“ডিসি অফিসগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত রয়েছে স্থান সংকুলানের সমস্যা। সেটার সমাধানের জন্য কী করা যায় সে বিষয়ে কথা বলা হয়েছে।
“প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে আমরা তাদের একটি অনুরোধ করেছি, যারা এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করার পর ছাত্ররা কয়েক মাস সময় পায় ওই সময়টাতে উনারা যাতে তাদের টি টি সি তে নিয়ে আসেন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে।”
জেলা প্রশাসকরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “উনারা বলেছেন বিদেশে যারা যেতে চায় তাদের সবার যেন ডাটাবেজ করা হয়। শুধু প্রশিক্ষণ যারা নিয়েছেন তাদের না। ওনারা যেটি বলেছেন সেটি আমরা সত্যি ভাবছি যারাই বিদেশে যেতে চায় তাদের ডাটাবেজ করার পদক্ষেপ নিয়েছি অচিরেই কাজ শুরু হবে। এছাড়া জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে আরো সচেতনতা সৃষ্টির কথা বলেছেন। সরকারি যে রিক্রুটিং এজেন্সি আসে সেগুলোকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। আমাদের কাছে ভালো লেগেছে এটা ভেবে যে এটা তো আমরাও ভাবছি।”
বিগত সরকারের সমালোচনা করে আসিফ নজরুল বলেন, “প্রশাসনের সবচেয়ে মেধাবী ব্যক্তিরা ডিসি হিসেবে হন। গত ফেসিস্ট রেজিম জনগণকে অত্যাচারের নিপীড়ন করার জন্য তাদের অপকর্ম জায়েজ করার জন্য ব্যবহার করেছে।
“আমরা আশা করব ভবিষ্যতে যেই দল এই বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসুক প্রশাসন ক্যাডারের আমাদের যে অসীম সম্ভাবনার শক্তি রয়েছে এটাকে যাতে জনগণকে নিপীড়নের কাজে না লাগিয়ে আমাদের সংবিধানে যেভাবে বলা আছে জনগণের সেবা করার কাজে যেন লাগায়। এটাই আমার প্রত্যাশা থাকবে।”
অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, “আমরা ডিসিদের বলেছি আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন অ্যাকশনে আদালত যেসব রায় দিয়েছে এই রায়গুলো আপনারা একটু পর্যালোচনা করবেন। প্রয়োজন হলে একজন গবেষক অফিসার রাখেন। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের সঙ্গে সমন্বয় করে আইনসঙ্গতভাবে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যা করা সম্ভব সেটা করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”