থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আটক ৩

এটি রাষ্ট্রপতির মোটরসাইকেল, সময় হলে সরানো হবে

আরিফ মোল্ল্যা,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: জনদূর্ভোগ লাঘভে শহর যানজটমুক্ত করতে রাস্তায় নেমে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। বাজারে যানজট নিরসনে সম্প্রতি পৌর কর্তৃপক্ষের এক অভিযানকালে রং পার্কিংয়ের একটি মোটরসাইকেল সরানোকে কেন্দ্র করেই ঘটে এক অনাকাঙ্খিত ঘটনা। সেখানে বাকবিতন্ডা ও মারামারিতে মটর সাইকেল মালিক টিপু সুলতান নামে একজন আহত হয়। সে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ভাগ্নে ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারী হওয়াতে প্রভাব দেখাতে গিয়েই ওই ঘটনার আরো জট বাধে। এরই পরিপেক্ষিতে আহত টিপুর মাতা গত সোমবার দুপুরে পৌর মেয়র, এমপির পিএস ও এক কাউন্সিলর সহ ১৪ জনের নামে থানাতে একটি অভিযোগ দায়ের করলে ৩ জন আটক হয়। অপরদিকে পৌর মেয়রও শহরের শৃংখলা নিয়ন্ত্রনে বাধাসৃষ্টিকারী টিপুর নামেও থানাতে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠায় জনস্বার্থে শহরে যানযট নিয়ন্ত্রন কার্যক্রমটি ভেস্তে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

পৌর মেয়র আশরাফ জানায়, ঈদ উপলক্ষে শহরের যানজট মুক্ত রাখতে ২২ মার্চ শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটের দিন বিকালে পৌরসভার একটি টিম মাঠে নামেন। এসময় রাস্তার উপরে মোটরসাইকেল রাখা টিপু সুলতান ওই টিমের সাথে অশোভন আচরন করে। একপর্যায়ে সে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে দাম্ভোক্তি দেখিয়ে বলেন, “এটি রাষ্ট্রপতির মোটরসাইকেল। সময় হলে সরিয়ে নেওয়া হবে। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হলে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর তার উপস্থিতিতেই মোটরসাইকেলের মালিক টিপু সুলতান পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর তেড়ে উঠেন। এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও জনতার রোষে টিপু সুলতান দৌড়ে পালাতে গিয়ে সড়কের উপর পড়ে পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। মেয়র বলেন, ঘটনার সময়ে তাৎক্ষনিক পুলিশে সংবাদ দেওয়া সহ আহত টিপুকে হাসপাতালে নেবার ব্যাবস্থা করেন। পরে জনস্বার্থে পৌরসভার কাজে বাধাসৃষ্টি করাতে ওই রাতেই টিপুর নামে থানাতে একটি অভিযোগ দেন মেয়র।

অপরদিকে সৃষ্ট ঘটনায় আহত টিপু সুলতানের মাতা বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ছোট বোন রিজিয়া বেগম থানায় দায়েরকৃত তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মচারী। শুক্র ও শনিবার অফিস ছুটি থাকায় সে বাড়িতে এসেছিল। এবং ওইদিন বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়ে রাস্তার পাশে তার মটরসাইকেলটি রেখেছিল। সেই সাইকেল সরানো নিয়েই মেয়র তার ছেলেকে গালীগালাজ করে। এ নিয়ে বাকবিতন্ডায় তার ছেলেকে মারপিট করে পা ভেঙ্গে দেয়। তিনি আরো বলেন, তার ছেলেকে অন্যায়ভাবে মারা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি মেয়র সহ ১৪ জনের নামে থানাতে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। জেলার মহেশপুরের মৃত মশিউর রহমানের ছেলে টিপু সুলতান তার বাবার চাকরীর সুবাদে মোবারকগঞ্জ চিনিকলের আবাসিক এলাকায় বর্তমান বসবাস।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু আজিফ জানান, টিপু সুতানের মাতার দায়েরকৃত অভিযোগে পুলিশ কামরান হোসেন, শিহাব ও বাবু নামে ৩ জনকে আটক করেছে। আর পৌর মেয়রের দেওয়া অভিযোগ পত্রের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে।

উল্লেখিত ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা হিরু সহ সাধারন মানুষের সাথে কথা বললে জানায়, বিশেষ করে রমজানে জনসাধারনের কষ্ট লাঘবে শহরকে যানজটমুক্ত ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা রাখতে মেয়র নিজেই মাঠে থেকে তদারকির কাজ করে থাকেন। ওইদিনও মেয়র পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে কাজ করছিল। কিন্তু এক ব্যাক্তির সাথে অনাকাঙ্খিত ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েন মেয়র। যেটা মোটেও কাম্য নহে।

আরও পড়ুন...