পিবিএ, ঢাকা : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম রাজধানীর উত্তরায় হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল এন্ড কলেজে ডিএনসিসি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার ( ০২ আগস্ট) ওয়ার্ডভিত্তিক বাসা-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে এডিস মশানিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এডিস মশা নির্মূলে কাজ করে যাওয়ার জন্য সকলকে একযোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা নিশ্চয়ই এডিস মশামুক্ত ঢাকা গড়তে পারি, দরকার শুধু সচেতনতা আর সামাজিক আন্দোলন। নিজ নিজ বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে কোথাও ৩ দিনের বেশি পানি জমতে দেয়া যাবে না। যেখানেই পরিত্যক্ত বালতি, কন্টেইনার ইত্যাদি পাওয়া যাবে, সেগুলো উপুড় করে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, এডিস মশা নির্মূলে ডিএনসিসির ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন ভবন পরিদর্শন করছে। এডিস মশা বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নগরবাসীকে ডেঙ্গু রোগ থেকে রেহাই দিতে এবার বাসাবাড়িতেও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এডিস মশা নির্মূলে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি ভাগে ভাগ করে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে আগামী সোমবার থেকে ডিএনসিসি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ শুরু করবে। এ কর্মযজ্ঞে প্রচুর স্বেচ্ছাসেবী দরকার হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ৬০০ যুব ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে কাজ করবে। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএনসিসির ওয়ার্ড কমিটি ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে স্কাউটস, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, এলাকাবাসী এবং যুব সংগঠনসমূহকে তিনি একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি সকল সাংবাদিককে বিভিন্ন এলাকার অপরিচ্ছন্নতার পূর্ণ তথ্য দিয়ে ডিএনসিসিকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানান। ডিএনসিসির সকল মশক সুপারভাইজার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ফোন নাম্বার আজ তিনটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। মেয়র সেগুলো সকলকে সংগ্রহ করতে অনুরোধ করেন এবং শীঘ্রই অন্যান্য জাতীয় দৈনিকগুলোতেও এই তথ্যগুলো প্রচার করা হবে বলে জানান। সকল মশককর্মীদেরকে জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে মনিটর করা হবে বলে তিনি জানান। সবাইকে একযোগে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, হাতে হাত রেখে এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মেয়র। ডিএনসিসির উদ্যোগে বিভিন্ন হাসপাতালে রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে মশারি দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন যে প্রত্যেক রোগীকে হাসপাতালে অবশ্যই মশারির ভেতরে রাখতে হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ডিএনসিসি এখন থেকে নিজেই মশার ঔষধ ক্রয় করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে ঔষধের মান সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন দুই-একদিনের মধ্যে নতুন ঔষধের নমুনা এসে পৌঁছাবে। নমুনা পরীক্ষা করার পরে যত দ্রুত সম্ভব ঔষধ ক্রয় করা হবে। তিনি বলেন শুধু ভারত নয়, আমরা যে কোনো দেশ থেকে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে প্রস্তুত। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, আমাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি নেই, তবে এখন থেকে বছরে ৩৬৫ দিনই এডিস মশা নিয়ে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: জাফর উদ্দীন, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফারুক আহমেদ, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আফছার উদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পিবিএ/বাখ