পিবিএ, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): বাংলাদেশ এক্সটেনশন এডুকেশন সার্ভিসেস (বিজ) এনজিও’র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল শাখার মাঠকর্মী সুজন চন্দ্র বর্মন ঋণ দেওয়ার নামে সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেশকিছু সহজ সরল দরিদ্র মহিলার কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
আজ শুক্রবার ( ৫ জুলাই ) সকালে এ নিয়ে স্থানীয় এই এনজিও অফিসে কয়েকজন ভুক্তভোগীর উপস্থিতিতে দেনদরবার হয়। এসময় এনজিও কর্মকর্তারা অভিযুক্ত সুজনকে আটকে রেখে তার বাবা সহ স্বজনদের এখানে উপস্থিত করেন।
জানা গেছে, সুজন বর্মন এখানে বীজ এর মাঠকর্মীর দায়িত্বপালনকালে বিভিন্ন সমিতির মহিলাদের কাছ থেকে ঋণ দেওয়ার নামে ও সমিতির সদস্যদের কিস্তির টাকা আদায়ের পর ঋণ বইয়ে পরিশোধ না দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান কিছুদিন আগে। পরে ভুক্তভোগীদের চাপে অতি-সম্প্রতি এনজিও কর্মকর্তারা সুজনকে ধরে এনে এখানে উপস্থিত করেন।
অভিযোগ আছে, অভিযুক্ত সুজনকে রক্ষা করতে এখানকার বীজ এর শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ মহি উদ্দিন এবং সহকারি ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম ভুক্তভোগী মহিলাদের সঙ্গে তামাশা শুরু করেছেন। ম্যানেজার এসব টাকা সুজনের কাছ থেকে আদায় করে মহিলাদের ফেরত দেওয়ার আশ্বাস একাধিকবার দিলেও এখন তিনি বিষয়টি নিয়ে ঠাট্টা করছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কয়েকজন ভুক্তভোগী মহিলা সরাইল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এসে হাউমাউ করে কেঁদে তাদের টাকা আদায়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান।
এসময় নাছিমা বেগম নামে ভুক্তভোগী মহিলা বলেন, আমার ৬০ হাজার টাকা। অফিসে গেলে ম্যানেজার মুচকি হাসি দিয়ে বলেন, আপা ধৈর্য্য ধরেন, সুজন আপনাদের টাকা ফেরত দিবে। কালীকচ্ছ এলাকার বাসিন্দা নাছিমা বেগম বলেন, এই টাকা না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই।
ভুক্তভোগী জুলেখা বেগম বলেন, আমার ২৫ হাজার টাকা ফেরত না পেলে সংসার ভেঙে যাবে। রুবি বেগম নামে ভূক্তভোগী মহিলা জানান, আমার ঋণের কিস্তি ৬০০০ টাকা সুজন নিলেও বইয়ে তোলেননি। ছালমা আক্তার নামে আরেক ভূক্তভোগী জানান, আমি ঋণ পরিশোধ করেছি বহু আগেই। সুজন আমার ব্যাংক চেকের পাতা লুকিয়ে ফেলেন। পরে শাখা ম্যানেজার কাগুজে লিখিত দেন চেক তারা হারিয়ে ফেলেছেন।
এ ব্যাপারে বীজ এনজিও’র সরাইল শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ মহি উদ্দিন বলেন, সুজন আমাদের হেফাজতে আছেন।এখানকার সকল সদস্যদের সমস্যা সমাধান না করা পর্যন্ত আমরা সুজনকে এখান থেকে যেতে দেব না। ভূক্তভোগী নাছিমা বেগম সহ অন্যান্যদের টাকা সুজনের কাছ থেকে আদায় করে ফেরত দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে কিছু সদস্যের টাকা সুজনের কাছ থেকে নিয়ে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
পিবিএ/আরিফুল ইসলাম সুমন/জেডআই