এপ্রিলে বন্ধ থাকা পোশাক কারখানায় ৬৫% বেতন

পিবিএ,ঢাকা: এপ্রিলজুড়ে বন্ধ থাকা পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন আরও ৫ শতাংশ বাড়ল। মোট বেতনের ৬৫ শতাংশ পাবেন তারা। এই সিদ্ধান্তের আগেই এপ্রিলের বেতনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় আগামী মাসের বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ সমন্বয় করা হবে।

সরকার, মালিক এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার শ্রম মন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। এর আগে গত বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এপ্রিলে বন্ধ থাকা কারখানার শ্রমিকদের মোট বেতনের ৬০ শতাংশ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ ছুটির সময় চালু থাকা কারখানার শ্রমিকরা মাসের পূর্ণ বেতনই পাবেন। আর গত ২৬ এপ্রিল থেকে চালু হওয়া কারখানাগুলোর যেসব শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন, তারাও আগের ২৫ দিনের মোট বেতনের ৬৫ শতাংশ এবং বাকি পাঁচ দিনের শতভাগ বেতন পাবেন।

জানা গেছে, শ্রমিক নেতাদের একটি অংশ ৬০ শতাংশ বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছিল। গত কয়েক দিনে এ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ হয়েছে। এ অবস্থায় গতকাল আবারও বৈঠকে বসেন সরকার, মালিক ও শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা শাজাহান খান এমপি, পোশাক খাতের উদ্যোক্তা ও এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ, বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক, শ্রম সচিব এ আলী আজম, বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, শ্রমিক নেতা আমিরুল হক আমিন প্রমুখ।

কারখানা বন্ধ থাকায় আর্থিক লোকসানের কারণে এবার বেতন ছাড়াও ঈদের বোনাস নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বোনাস নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে আগামী সপ্তাহে আবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তারিখ নির্ধারিত না হলেও আগামী রোববার শ্রম মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক হতে পারে বলে জানা গেছে। সব পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। অবশ্য গত সপ্তাহে যথাসময়ে বোনাস পরিশোধে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

জানা গেছে, এপ্রিলের বেতন বৃদ্ধি ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে আগের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আপাতত কোনো কারখানা শ্রমিক ছাঁটাই বা কারখানা লে-অফ (সাময়িক বন্ধ) না করার বিষয়েও একমত হয়েছে মালিকপক্ষ।

বেতনের জন্য ঋণের আবেদন :রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিল, মে ও জুন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে সরকার। এ তহবিল থেকে শুধু এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধের জন্য ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকার ঋণের আবেদন করেছে ৪৭টি ব্যাংক। ২ হাজার ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এসব আবেদন পড়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু অর্থ ছাড় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে ঋণের জন্য প্রথমে আবেদনের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২০ এপ্রিল। পরে বিজিএমইএ, বিকেএমইসহ বিভিন্ন সংগঠনের দাবির পরিপ্রেক্ষিত ৩ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। এই তহবিল থেকে ঋণ পরিশোধে কারখানা মালিকরা ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ দুই বছর সময় পাবেন।
পিবিএ/এএম

আরও পড়ুন...