এবার উন্মুক্ত নকল উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে

পিবিএ ডেস্ক: কারও সামনে বইয়ের ছেঁড়া পাতা, কারও সামনে পুরা বই খোলা। তা দেখে উত্তরপত্রে লিখছে পরীক্ষার্থীরা। ঠাকুরগাঁওয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) অধীনে চলমান এইচএসসি পর্যায়ের ১ম বর্ষের পরীক্ষায় শুক্রবার এমন চিত্র দেখা গেছে।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে গত ২৬ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু হয়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কেন্দ্রে ৪৯৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে।

গত ২৬ এপ্রিল বাংলা পরীক্ষার সময় বেলা ১১টার দিকে রাণীশংকৈল বিএম কলেজ কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার্থীরা অবাধে বইয়ের পাতা বেঞ্চের ওপরে রেখে তা দেখে উত্তরপত্রে উত্তর লিখছে।

আবার কেউ পুরো বইটাই বেঞ্চের ওপর রেখে উত্তরপত্রে উত্তর লিখছে। কোথাও আবার একজন পরীক্ষার্থীর সামনে থাকা বইয়ের পাতা দেখে কয়েকজন পরীক্ষা লিখছে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তা প্রতিরোধে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। পরবর্তীতে গত ১০ মে শুক্রবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষায় পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে একই দৃশ্যের দেখা মেলে।

পরীক্ষার কেন্দ্রে এই প্রতিবেদককে ঢুকতে দেখে কেন্দ্রে পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন শিক্ষক এগিয়ে আসেন। সে সময় কেন্দ্র সচিব মোঃ হাসান আলী নবাব বলেন, ‘আসুন অফিস কক্ষে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি।’ তাদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, যাদের কোনো উপায় নেই তারাই উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়। শিক্ষা নয়, সনদ হাতে পাওয়াটাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এসব কারনে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষকদের কিছুটা ছাড় দিতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলে সুযোগ সুবিধা দেয়ার জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর নিকট হতে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এছাড়াও প্রতি পরীক্ষায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমানে টাকা নেয়া হয়।

জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর ইসলাম বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি, তাই পরিস্থিতি এখনও বুঝতে পারিনি। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায়, উপ-সহকারী প্রকৌশলীর সামনেই সকলে নকল করছে।

উক্ত বাউবি পরীক্ষায় জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার মতো কোন কাজ করতে দেয়া হবে না, কেউ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপরোক্ত বিষয়ে প্রশ্ন করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী আফরিদা উক্ত দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলেন, আমি ঢাকায় রয়েছি, তাই এ ব্যাপারে এই মুহুর্তে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছি না।

পিবিএ/জেআই

আরও পড়ুন...