ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের আবাসিক হলে ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে রুম দখল ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা আক্তার সাইমুনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কলেজের নতুন হলের (ফাতেমা হল) দ্বিতীয় তলার ২০০০৭ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর নাম রাবেয়া (ছদ্মনাম)। কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই রুম দখলের জন্য কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবীবা চেষ্টা করছিলেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বাদানুবাদও হয়েছে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় শনিবার দিবাগত রাতে জোর করে তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের এ রুমে উঠিয়ে দিয়ে অন্যদের রুম পরিবর্তন করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার কথা মতো রুম পরিবর্তন করতে না চাইলে জোর-জবরদস্তি করে বিছানাপত্র ফেলে দেওয়া হয়েছে।
রাবেয়া বলেন, এ ঘটনায় মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়েছি। এসব বিষয় আগেই কলেজ প্রশাসনকে জানিয়েছি। কলেজের প্রশাসন রোববার বিষয়টি নিয়ে বসবেন, এর আগেই তিনি অনুসারীদের দিয়ে জোরপূর্বক এমন কাজ করছেন। শেষ পর্যন্ত তারা রুমটি দখল করেই নিয়েছে।
অপরদিকে এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে মন্তব্য করেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন।
মেয়েদের কেন জোর করে হলের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাদেরকে বের করে দিচ্ছি বিষয়টি এমন নয়। তাদের রুম পরিবর্তন করা হচ্ছে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে। তারা (ভুক্তভোগীরা) যে হলে থাকে সেখানে দ্বিতীয় তলার মেয়েদের সঙ্গে উল্টাপাল্টা ব্যবহার করে, ভিডিও করে। এ জন্য কলেজ প্রশাসনের কাছে মেয়েরাই অভিযোগ করেছে। প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে যেন ওদের সিট পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন আমাকে জড়ানো হচ্ছে। আমি তো এটার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না।
রুম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত প্রশাসনের উপস্থিতিতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, নাকি আপনি বের করে দিচ্ছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত তারাই বাস্তবায়ন করছে।
এসব বিষয়ে কথা বলতে বদরুন্নেসা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সেলিনা আক্তার শেলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ছাত্রলীগের একটি প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি ময়মনসিংহে অবস্থান করছেন। কলেজে কি হচ্ছে সেটি জানেন না। তবে ঘটনা শুনেছেন ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে কলেজ প্রশাসন বসে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিকুন্নাহার। তিনি বলেন, বিষয়টি জেনেছি ও সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি দেখব।