চলতি বছরের এসএসসি-সমমান পরীক্ষা আগামী জুনের মাঝামাঝি এবং এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা আগস্টের মাঝামাঝি আয়োজন করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বছর (২০২২ সালে) এসএসসি তিনটি ও এইচএসসিতে দুটি বিষয়ের পরীক্ষা থাকছে না। এছাড়া বিজ্ঞান বিভোগে ৪৫ নম্বর এবং বাণিজ্য ও মানবিকে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতিটি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের জরুরি এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরেও এসএসসি-সমমান ও এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার আগে নির্বাচনী পরীক্ষা থাকছে না। তবে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চাইলে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নিতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের এসএসসিতে আইসিটি, ধর্মীয় শিক্ষা এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং এইচএসসিতে আইসিটি এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। এবছর বিজ্ঞান বিভাগে প্রতিটি বিষয়ে মোট ৪৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে সৃজনশীল ৮টি প্রশ্নের মধ্যে তিনটির উত্তর দিতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নে ১০ করে ৩০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে। এছাড়া নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ১৫টির, মোট নম্বর ১৫।
মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে। তার মধ্যে ১১টি সৃজনশীল প্রশ্নের ৪টির উত্তর দিতে হবে। প্রতিটিতে ১০ করে অর্থাৎ ৪০ নম্বরের উত্তর দিতে হবে। এছাড়া ১৫ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন থাকবে। শুরুতে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, এরপর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। সব মিলিয়ে পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে বিজ্ঞান বিভাগে প্রতিটি বিষয়ে তিনটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটিতে ১০ নম্বর দেওয়া হবে। এমসিকিউ প্রশ্নে ১৫ নম্বর দেওয়া হবে। মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের জন্য চারটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটিতে ১০ নম্বর করে দেওয়া হবে। এমসিকিউতে ১৫ নম্বর থাকবে।
তিনি জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরীক্ষার্থীদের পুরো সিলেবাস পড়ানো সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় আইসিটি, ধর্মীয় শিক্ষা এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয় বাদে অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বর্তমানে সময় স্বল্পতার কারণে এসএসসি-এইচএসসিতে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নিতে পারবে, যোগ করেন ওই বোর্ড চেয়ারম্যান।
আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের সভাপতি (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক তপন কুমার সরকার রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বলেন, আজ বিকালে সব শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল তার আলোকে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেসব লিখিত আকারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে সব শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ শিক্ষামন্ত্রী আগেই ঘোষণা দিয়েছেন। তবে আমরা তারিখ নির্ধারণ করিনি। পরীক্ষা আয়োজনে আমাদের যে সময় লাগবে তার প্রেক্ষিতে শুধুমাত্র মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এই প্রস্তাব পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় তারিখ নির্ধারণ করবে। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে এই বিষয়ে সব শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের হাতে এখন পর্যাপ্ত সময় নেই। তবে কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জানানো জরুরি হয়ে পড়েছে। সে কারণেই আজ আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের সভা ডাকা হয়। সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে তা আগামীকাল (সোমবার) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত জানালে আমরা পরীক্ষা আয়োজনের পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবো।