এস-৪০০ মিসাইল ক্রয়: তুরস্ককে আবারো হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০

পিবিএ ডেস্ক: রাশিয়ার কাছ থেকে বিমান বিধ্বংসী মিসাইল এস-৪০০ প্রযুক্তি কেনায় তুরস্ককে সতর্ক করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।রাশিয়ার এই অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিকে মার্কিন জেট বিমানের জন্য হুমকি হিসাবে দেখছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রাশিয়ার সাথে এস-৪০০ ক্ষেপনাস্ত্র ক্রয়ের চুক্তি করার পরই ন্যাটোভুক্ত যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের সম্পর্কে তিক্ততা দেখা দেয়। এর আগে ১০৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১০০টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ ক্রয়ের চু্ক্তি করে তুরস্ক।কিন্তু দীর্ঘ দেড় যুগ পার হলে বিমান দিতে গড়িমসি করে যুক্তরাষ্ট্র।এরপরই রাশিয়ার কাছ থেকে বিমান প্রতিরক্ষা ক্রয়ের চুক্তি করে তুরস্ক।এর পরের বছর মাত্র ১টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে রাশিয়ার সাথে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল করার জন্য চাপ দিতে থাকে ট্রাম্প প্রশাসন।কিন্তু এরদোগান তার সিদ্ধান্ত অটল থাকেন।তিনি বলেন, তুরস্ক নিজের প্রতিরক্ষার জন্য যে কারো কাছ থেকে অস্ত্র ক্রয়ের অধিকার রাখে।

সম্প্রতি রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপনাস্ত্রের প্রথম পর্বের একটি চালান গ্রহণ করেছে তুরস্ক।এরপরই ফের মার্কিন তরফ থেকে হুমকি এলো।

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স বলেছেন, তুরস্ককে বেছে নিতে হবে যে, তারা কি গুরুত্বপূর্ণ নেটো সদস্য হিসাবে থাকবে, নাকি এরকম দায়িত্বহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে যৌথ নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলবে।

তুরস্ক জবাব দিয়েছে যে, ওই উন্নততর প্রযুক্তি কেনার ব্যাপারে এর মধ্যেই চুক্তি হয়ে গেছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে আঙ্কারা।

২৯টি দেশ নিয়ে গঠিত নেটো জোটের মধ্যে তুরস্ক দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক শক্তির অধিকারী, যে জোট গঠিত হয়েছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবিলা করার জন্য।

মাইক পেন্স জার্মানিরও সমালোচনা করেছেন যে, দেশটি তাদের প্রতিরক্ষায় পর্যাপ্ত অর্থ খরচ করছে না।

তবে এসব কথার ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি মস্কো।

ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে রাশিয়ার দখল আর গুরুত্বপূর্ণ একটি মিসাইল চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে যাওয়ার পর থেকে রাশিয়া ও নেটোর মধ্যে সম্পর্কের অনেক অবনতি হয়েছে।

নেটোর ৭০তম বর্ষপূর্তিতে মাইক পেন্স বলেছেন, ”তুরস্ককে অবশ্যই বেছে নিতে হবে।”

”তারা কি ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক জোটের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসাবে থাকতে চায় নাকি দায়িত্বহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলতে চায়, যা আমাদের জোটকে খাটো করবে?”

এর মধ্যেই ওয়াশিংটন তাদের এফ-৩৫ ফাইটার প্রোগ্রাম থেকে তুরস্ককে সাময়িক স্থগিত করেছে।

ওই প্রযুক্তির বদলে মার্কিন প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

নেটোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার ওই মিসাইল প্রযুক্তি নেটোর অস্ত্রশস্ত্রের সঙ্গে খাপ খায় না।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট কাভুসোগলূ বারবার বলেছেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে ওই চুক্তিটি বাতিল করা সম্ভব নয়।

পরে একটি টুইট বার্তায় তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ”যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই বেছে নিতে হবে।”

”তারা কি তুরস্কের বন্ধু হিসাবে থাকতে চায়, নাকি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আমাদের বন্ধুত্বকে ঝুঁকিতে ফেলতে চায়, যারা শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেটো সহযোগীদের প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করে তুলতে চায়?”

পিবিএ/এএইচ

আরও পড়ুন...