
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বে। এরই মধ্যেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বের ৭৭টি দেশে ছড়িয়েছে। তবে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ওমিক্রনের উপস্থিতি থাকতে পারে বলে ধারণা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে সংস্থাটির প্রধান ড. তেদরস আধানম গেব্রিয়াসুস জানিয়েছেন, ভ্যারিয়েন্টটি অপ্রত্যাশিতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। আগের ভ্যারিয়েন্টেগুলোকে ওমিক্রনের মতো এত দ্রুত ছড়াতে দেখিনি।
কিছুদিন আগেও করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছিলো দেশ থেকে বিদেশে। এবার নতুন এই করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আশঙ্কায় আছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও দুশ্চিন্তা বিষয় হলো, এই ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে ঘটেছে অনেক পরিবর্তন। এই বদলে যাওয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে কতটা কাজ করবে টিকা, তাই নিয়েও সন্ধিহান মানুষ। তাই সব মহলেই এই ভাইরাসকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক বাড়ছে।
এমন অনেক আক্রান্তের খবর মিলেছে যারা করোনার দু’টি ডোজ এমনটি বুস্টার নেওয়ার পরেও ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুটি টিকা বা বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরেও ওমিক্রন থেকে আপনার কোনো ভয় নেই, এ ধারণা রাখবেন না। কারণ ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এর ধরন থেকে শারীরিক ক্ষতি করার মাত্রা সম্পূর্ণ ভিন্ন পর্যায়ের।
টিকা নেওয়ার পরও কতটা ঝুঁকি আছে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার? এই প্রসঙ্গে ভারতের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মিত্র জানান, টিকা নেওয়ার পরও হতে পারে করোনা। এক্ষেত্রে দেখা গেছে, টিকা সম্পূর্ণ হওয়া ২০-৩০ শতাংশ মানুষের ফের সংক্রমণ হচ্ছে।
কারণ কোনো ভ্যাকসিনই সম্পূর্ণ কার্যকর নয়। আর করোনা যখন নিজের রূপ বদল করেছে, সেক্ষেত্রে আগে তৈরি হওয়া এই টিকা কতটা রোগের হাত থেকে থেকে বাঁচাতে পারবে তা সময়ই বলবে। তবে মানুষকে থাকতে হবে সতর্ক।
এমনকি করোনার দুটি টিকা নেওয়া অনেক ব্যক্তিদেরও শরীরেও ওমিক্রন থাবা বসাতে পারে। আসলে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এমন মানুষের টিকা নেওয়া থাকলেও ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
কারণ এসব মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম থাকে। আবার বয়স ৬০ বছরের বেশি হলেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এই বয়সেও ইমিউনিটি কমে। এছাড়া যাঁরা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন, তাঁদে ব্যক্তিদেরও বিশেষভাবে সচেতন হওয়া উচিত।
পাশাপাশি যারা হাসপাতালে কাজ করেন, তাদেরও সংক্রমণ ঘটতে পারে। অন্যদিকে ভিড় কিংবা গণপরিবহনে যারা যাতায়াত করেন, মাস্ক পরেন না, এমন মানুষগুলোরও টিকা নেওয়ার পর হতে পারে সংক্রমণ।
টিকা নেওয়া থাকলেও ওমিক্রন হতে পারে, তাই বলে যে করোনা টিকা গ্রহণ করবেন না তা কিন্তু ঠিক নয়। কোভিডের দুটি টিকা অবশ্যই নিতে হবে। এটি ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করবে। পাশপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। যতটা সম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। অযথা আতঙ্কিত হবেন না।
সূত্র: এই সময়