ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওসি মনিরুলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন। মনিরুল ইসলামের বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটটি নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেওয়া হয়।
৫ আগস্ট জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওসি মনিরুল ইসলামের বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধান নির্দেশনা চেয়ে ১০ আগস্ট রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। সেদিন শুনানি নিয়ে আদালত অভিযোগ বিষয়ে রিট আবেদনকারীকে দুদককে আবেদন দিতে বলেন। রিটের শুনানি ২১ আগস্ট পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার (মুলতুবি) করেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি ওঠে।
অন্যদিকে ওসির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান নিয়ে রিট আবেদনকারী ১১ আগস্ট দুদকে আবেদন দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক, দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, ওসির পক্ষে আইনজীবী মাহবুব শফিক ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে ছিলেন।
ওসির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করার বিষয়ে ১৭ আগস্ট দুদক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আদালতকে জানান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এরপর অভিযোগের অনুসন্ধান তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়ে আদালত রিটটি নিষ্পত্তি করে দেন।
জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওসি মনিরুল ইসলাম ঢাকায় আটতলা বাড়ি করেছেন। বানাচ্ছেন আরেকটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে তাঁর রয়েছে চারটি প্লট। রাজধানীর মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটিতে এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে ওসির বিরুদ্ধে।
ওসির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করার বিষয়ে ১৭ আগস্ট দুদক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আদালতকে জানান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পুলিশের একজন পরিদর্শক হয়ে ওসি মনিরুল কীভাবে এত সম্পদের মালিক হয়েছেন, তা নিয়ে পুলিশ বিভাগে আলোচনা চলছে। বর্তমানে তিনি নবম গ্রেডে ২২ হাজার টাকা স্কেলে সাকল্যে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেতন পান। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি এই সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধারণা করছেন।
জানা যায়, ১৯৯২ সালে উপপরিদর্শক (এসআই) পদে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন মনিরুল ইসলাম, যখন এই পদটি তৃতীয় শ্রেণির ছিল। ২০১২ সালে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক হন। প্রায় ৩০ বছরের চাকরিজীবনে বেশির ভাগ সময় ঢাকা রেঞ্জে ছিলেন। তাঁর বাড়ি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায়।