কক্সবাজারে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে লাখো মানুষ

পিবিএ,কক্সবাজার: কক্সবাজারে পাহাড়ে ও পাহাড়ের নিচে ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে লাখো মানুষ। পাহাড় কেটে বানাচ্ছে নতুন নতুন ঘর।নেই তাদের মাঝে কোন শংকা। ভারী বৃষ্টিপাত হলেই ভয়াবহ পাহাড় ধসের আশঙ্কা থাকে । প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে হাজার হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। তবুও এখনও সচেতন হয়নি অধিকাংশ পরিবার। দিন দিন ঝুঁকি নিয়েই পাহাড়ের ও পাহাড়ের নিচে বসবাস করছে তারা । ফলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। পাহাড় কেটে এই সব বসবাসকারী বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে সেখানে থাকছে। পাহাড় কাটার ফলে দুর্বল হয়ে পড়ছে পাহাড়ের ভিত্তি। ফলে বৃষ্টিতে মাটি দুর্বল হয়ে পাহাড় ধসে পড়ছে। বসবাসকারীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতির সংখ্যা আরো বেড়েছে।

পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে লাখো মানুষ
পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে লাখো মানুষ

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার ভূমিকম্প ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা। পাহাড়ে বসতি গড়তে পাহাড় কাটতে হয়। পাহাড় ধস হবে এমন চিন্তা না করেই তারা বসতি গড়ে তোলেন। তবে যেভাবে কক্সবাজারের বিভিন্ন পাহাড়ে বসতি স্থাপন করা হয়েছে তা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। বিগত সময়ে কক্সবাজারে অনেকবার পাহাড় ধস হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যথাসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে না। অসময়ে বৃষ্টি হলে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বাড়ে।

এছাড়াও ভারী বৃষ্টি ও একই সাথে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলেই বড় ধরনের পাহাড় ধস হতে পারে। তাই আগে বাগেই ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সরিয়ে আনা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে অধক্ষ্য ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী পিবিএকে জানান, কোনো বাধা ছাড়াই পাহাড়ে বসতি গড়তে পারাই দিনদিন ঝুঁকিপূর্ণ বসতবাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। কক্সবাজারের পাহাড় দেখলে কোনো গাছপালা দেখা যায় না। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই বসতবাড়ি। এভাবে অবৈধ বসতবাড়ি গড়ে তুললেও কোনো বাধা আসছে না প্রশাসন থেকে।

অনেকেই পাহাড় দখল করে ব্যবসায় নেমেছে। প্লট বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে পাহাড়ি জমি। প্রভাবশালীদের দৃষ্টি এখন পাহাড়ের দিকে। পাহাড়ে যে বসতবাড়ি রয়েছে তার অধিকাংশই পাহারাদাররা বসবাস করে। মালিক পরিবর্তন হলে পাহারাদারও পরিবর্তন হয়। অনেক বসতবাড়ি সন্ত্রাসীদের আস্তানা হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে।

কক্সবাজার পৌরসভা মেয়র মুজিবুর রহমান পিবিএকে বলেন, ‘মূলত কেউ পাহাড়ে শুরুতে ছোট ঘর তৈরি করে। পরে আস্তে আস্তে পাহাড় কেটে সব জমি নিজেদের দাবী করে। আমি সবসময় বলি পাহাড় কাটা বন্ধ হলে শহরের অর্ধেক সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আর সরকার মানুষের উপকারের জন্য কাজ করছে এটা মানুষের বোঝা উচিত।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন পিবিএকে বলেন, ‘মানবিকতা এক জিনিস, তবে জীবনের নিরাপত্তা সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে হবে। আবেগ দিয়ে নয়, বাস্তবতা বোঝা উচিত। সহায় সম্পদ ঘর-বাড়ি মানুষ চাইলে আবার অর্জন করতে পারবে। কিন্তু জীবন চলে গেলে তা আবার আসবে না। তার জন্য সারা জীবন কান্না করতে হবে।

পিবিএ/টিএ/আরআই

আরও পড়ুন...