কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)-এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মফিদুর রহমানের সভাপতিত্বে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করণ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে গঠিত নিরাপত্তা কমিটির ২য় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে কমিটির সদস্যগণ কক্সবাজার অপারেশন এলাকাসহ রানওয়ে সমুদ্রে সম্প্রসারণ কাজ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে বিমানবন্দরের এয়ার সাইডের নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করা হয়। এরপর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে বেবিচক চেয়ারম্যান কাজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। এ সময় প্রকল্প কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হতে জানানো হয় যে, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রানওয়ে সমুদ্রে সম্প্রসারণ কাজের বর্তমান অগ্রগতি ৩৬%। যা আগামী সেপ্টেম্বর- অক্টোবর/২০২৩ এর মধ্যে সমাপ্ত হবে জানানো হয়।
বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শনের পর সভার কার্যক্রম শুরু হয়। সভায় কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করনের জন্য বিমানবন্দর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নিরাপত্তা ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করা ও তা সমাধানের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় এভিয়েশন সিকিউরিটি ও এরোড্রাম সার্টিফিকেশনের দৃষ্টিকোন থেকে বিমানবন্দর এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো সংহত করার বিষয়ে বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তাঁর প্রস্তাবনায় তিনি এয়ার সাইড, টার্মিনাল ভবন ও ল্যান্ড সাইডের নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়টি তুলে ধরেন।
প্রস্তাবনার বিষয়ে বিমান বাহিনী ঘাঁটি, কক্সবাজারের এয়ার অধিনায়ক, এনএসআই এর প্রতিনিধি, ডিআইজি, পুলিশ সদর দপ্তর, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, কক্সবাজার, পুলিশ সুপার, কক্সবাজার, র্যাব-এর প্রতিনিধিসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিগণ মতামত প্রদান করেন। বক্তব্যে সকলে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করণের বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
সভায় বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করণের বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়েছেন। তাঁরই দিক নির্দেশনার কারণে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬ হাজার ফুট থেকে ৯ হাজার ফুটে উন্নীত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী প্রথম সুপরিসর বিমানযোগে কক্সবাজারে অবতরণ করেন। তাঁরই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কক্সবাজার বিমানবন্দর সমুদ্রে সম্প্রসারণ কাজ এগিয়ে চলেছে। তিনি “কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জতিক বিমানবন্দরে পরিণত করা” জাতির পিতার এই স্বপ্ন ও প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় অঙ্গীকার বাস্তবায়নে স্থানীয় সকল প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করণের জন্য আইকাও (ICAO-International Civil Aviation Organization)-এর মানদণ্ড অনুযায়ী টাওয়ার বিল্ডিং, ফায়ার ষ্টেশনসহ অন্যান্য স্থাপনা সরিয়ে পুনঃ নির্মাণ প্রয়োজন হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। বিমানবন্দর এলাকা থেকে এ পর্যন্ত অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ৬০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবশিষ্ঠ অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চেয়ারম্যান আরও বলেন যে, এ বিমানবন্দর সকলের। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণের ক্ষেত্রে সকল ষ্টেক হোল্ডারের মধ্যে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে এবং সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। আজকের সভায় স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করায় চেয়ারম্যান মহোদয় সকলকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় বেবিচকের অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ বিমান বাহিনী ঘাঁটি, কক্সবাজার এর অধিনায়ক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং কক্সবাজার জেলা পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।